মাঠ পরিদর্শন বিজেপি নেতাদের। —নিজস্ব চিত্র।
অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন মিটতেই লোকসভা ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। সেই আবহেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলায় আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আগামী ২৯ জানুয়ারি মেচেদায় বিজেপির তমলুক, কাঁথি, ঘাটাল, মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম সাংগঠনিক জেলার বুথ স্তরের কর্মীদের নিয়ে তাঁর সভা করা কথা। সেই মতো প্রস্তুতিও শুরু হয়েছে।
মেচেদায় কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ফুটবল ময়দানে ওই সাংগঠনিক সভা আয়োজনের জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের কাছে মঙ্গলবার আবেদন জানিয়েছেন বিজেপির তমলুক সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্ব। কর্মিসভার প্রস্তুতিতে বুধবার বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য শ্যামল মাইতি, জেলা সাধারণ সম্পাদক সোমনাথ ভুঁইয়া, জেলা সম্পাদক তথা জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা বামদেব গুছাইত ও কিষান মোর্চার জেলা সভাপতি দীপক দাস-সহ স্থানীয় মণ্ডল নেতৃত্ব মেচেদার ওই ফুটবল ময়দান পরিদর্শনও করেন। জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা বামদেব গুছাইত বলেন, “আগামী ২৯ জানুয়ারি দলের মেদিনীপুর বিভাগের পাঁচ’টি সাংগঠনিক জেলা- তমলুক, কাঁথি, মেদিনীপুর, ঘাটাল ও ঝাড়গ্রামের বুথের পদাধিকারীদের নিয়ে সভা করবেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের বিষয়ে কর্মীদের দিশা দিতেই এই কর্মীসভা হবে। সভাস্থলের জায়গা ব্যবহারের জন্য জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষের অনুমতি চাওয়া হয়েছে।পুলিশ-প্রশাসনের কাছেও আবেদন জানানো হয়েছে।’’
আসন্ন লোকসভার ভোটে পূর্ব মেদিনীপুরের দু'টি আসন তমলুক ও কাঁথি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে উপহার দেওয়ার কথা আগেই জানিয়েছেন শুভেন্দু। শুভেন্দুর জেলা যে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে কতটা গুরুত্বপূর্ণ শাহের সফরে তারই ইঙ্গিত রয়েছে বলে মনে করছেন রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যের অন্যান্য জেলার তুলনায় পূর্ব মেদিনীপুরে ভাল ফল করেছে বিজেপি। জেলার প্রায় ৮০টি গ্রামপঞ্চায়েত এবং তিনটি পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতা দখল করেছে তারা। গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির বাকি আসনে এবং জেলা পরিষদে প্রধান বিরোধী দলও বিজেপি।
এ বার লক্ষ্য লোকসভা। সেই ভোটের আগে জেলায় যেখানে নিচুতলায় সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি প্রয়োজন, সেখানে বুথ সশক্তিকরণ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। দলের ‘প্রবাস’ কর্মসূচিতে জেলায় একাধিকবার এসেছেন কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী ও কেন্দ্রীয় নারী-শিশুকল্যান মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। কয়েকদিন আগে কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরও ‘প্রবাস’ কর্মসূচিতে কাঁথি ঘুরে গিয়েছেন। তিনি অধিকারী বাড়িতেও যান। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তথা রাজ্যের পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে এবং রাজ্য যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) সতীশ ধন্দও সম্প্রতি মেচেদায় তমলুক, কাঁথি, মেদিনীপুর ও ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক করেছেন। এ বার সেখানে শাহের সাংগঠনিক সভা।
এই সভার প্রস্তুতিতে আজ, বৃহস্পতিবার বিজেপি জেলা নেতৃত্বকে নিয়ে বৈঠক হবে। প্রাথমিক ভাবে দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পাঁচ’টি সাংগঠনিক জেলা মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার বুথস্তরের কর্মী শাহের সভায় হাজির থাকবেন। প্রতিটি বুথ কমিটিতে গড়ে ১১জন করে রয়েছেন। তবে প্রতিটি বুথ থেকে ৪-৫ জন করে কর্মীকে সভায় আসতে বলা হবে। আর তাতে কর্মিসভা আদতে জনসভার আকার নেবে। সেই মতো দলের পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসনের প্রস্তুতিও প্রয়োজন। তাই বিজেপির তরফে দলীয় ভাবে পুলিশ-প্রশাসনের কাছে ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।