বাড়ির সামনে রাস্তার পড়ে ভাঙা কাচের টুকরো। নিজস্ব চিত্র।
নারদা-কাণ্ডের অভিযুক্ত তথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে সিবিআই কেন গ্রেফতার করেনি, এই প্রশ্নে সোমবার দিনভর বিক্ষোভ দেখিয়েছেন জেলার তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা। রাতে নারদ-ভিডিয়োয় দেখা যাওয়া আরেক বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডার কাঁথির বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ উঠল।
নারদ কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলের করা একটি স্টিং অপারশেনের ভিডিয়ো ২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের আগে সামনে আসে। তাতে শুভেন্দু-সহ অর্থ নিতে দেখা গিয়েছিল বহু তাবড় তাবড় রাজনৈতিক নেতৃত্বকে। ওই দুর্নীতি-কাণ্ডে সোমবার সিবিআই রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, বিধায়ক মদন মিত্র এবং বিজেপি নেতা শোভন চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে। নারদ নিউজের পক্ষ থেকে করা স্টিং অপারেশনের ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে শঙ্কুদেব পণ্ডাকেও। শঙ্কু অবশ্য সরাসরি টাকা না-নিলেও তাঁকে কোনও একটি সংস্থার অংশীদারিত্ব চেয়ে দরাদরি করতে দেখা গিয়েছে।
এই শঙ্কুর বাড়িতেই সোমবার রাতে হামলা চালানোর অভিযোগ উঠেছে। কাঁথি শহরের থানা পুকুর পাড় এলাকায় শঙ্কুদের দোতলা বাড়ি রয়েছে। সেই বাড়ির জানালার কাঁচ এবং ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা ভাঙার অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। বিজেপি নেতা শঙ্কু দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে এই বাড়িতে থাকেন না। তবে তাঁর বাবা-মা বাড়িতে থাকেন। তবে হামলার সময় তাঁরা বাড়িতে ছিলেন কি না, তা জানা যায়নি। মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ওই বিজেপি নেতার বাড়িতে পুলিশও যায়নি বলে জানা গিয়েছে।
প্রতিবেশীদের অভিযোগ- সোমবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ পাঁচ-সাত জন দুষ্কৃতী হামলা চালিয়েছে। সপ্তাহ খানেক আগেও শঙ্কুর পাশের বাড়িতে দুষ্কৃতীরা ভাঙচুর চালিয়ে ছিল বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। শঙ্কুর বাড়ির গা ঘেঁষেই রয়েছে দক্ষিণ কাঁথি বিধানসভার পরাজিত সিপিআই প্রার্থী অনুরূপ পণ্ডার বাড়ি। অভিযোগ, একেবারে পাশাপাশি বাড়ি থাকার ফলে বিধানসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর শঙ্কুর বাড়ি চিনতে না পেরে তার প্রতিবেশীর বাড়িতেও দুষ্কৃতীরা ভাঙচুর চালিয়েছিল। হামলার ব্যাপারে শঙ্কুকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘আমি করোনা আক্রান্ত। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’’ আর কিছু জিজ্ঞাসাবাদ করার আগেই তিনি ফোন কেটে দেন।
তৃণমূলের ছাত্রসংগঠনের রাজ্য সভাপতি থাকাকালীন শঙ্কুকে নারদ কর্তার ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছিল। পরে শঙ্কু তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, সোমবার নারদ মামলায় যখন সিবিআই তৃণমূলের মন্ত্রী এবং বিধায়কদের গ্রেফতার করেছে, তখন শঙ্কুর বিরুদ্ধে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। এ নিয়ে শাসক দলের কর্মীদের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে ওই রাতে। যদিও জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা রাজ্যের সেচ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেন, ‘‘এ ধরনের ঘটনা যে-ই ঘটিয়ে থাক তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। পুলিশ তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক।’’