স্কুলে দোলনা বিলিতে নিয়ম ভাঙার নালিশ

ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল বিলি হয়েছে। বন্দোবস্ত হয়েছে ইউনিফর্ম, জুতোরও। এ বার সেই তালিকায় জুড়েছে খেলনা, দোলনা। স্কুলছুটের সংখ্যায় রাশ টানতে রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে দোলনা, খেলনা বিলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share:

ছাত্রছাত্রীদের সাইকেল বিলি হয়েছে। বন্দোবস্ত হয়েছে ইউনিফর্ম, জুতোরও। এ বার সেই তালিকায় জুড়েছে খেলনা, দোলনা। স্কুলছুটের সংখ্যায় রাশ টানতে রাজ্যের প্রাথমিক স্কুলগুলিতে দোলনা, খেলনা বিলির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যে মোট ৯৯০টি প্রাথমিক স্কুলে খেলনা, দোলনা দেওয়া হবে। তার মধ্যে রয়েছে পশ্চিম মেদিনীপুরের ৯৩টি স্কুল।

Advertisement

কিন্তু এই তালিকা নিয়ে তৈরি হয়েছে ক্ষোভ। অভিযোগ, নির্দেশিকা উড়িয়েই একাংশ স্কুলকে তালিকায় ঠাঁই দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারের নির্দেশিকায় উল্লেখ রয়েছে এই প্রকল্পের সুবিধা পেতে সীমানা পাঁচিল দিয়ে ঘেরা স্কুলের পর্যাপ্ত জমি থাকতে হবে। সেই জমি থাকতে হবে স্কুলের নামে ইত্যাদি। অভিযোগ, যে ৯৩টি স্কুলকে বাছা হয়েছে, তাদের অনেকেই এই সব শর্তপূরণ করতে পারেনি। আর যেহেতু এ ক্ষেত্রে সব স্কুলকে আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হয়নি, ফলে পরিকাঠামো রয়েছে এমন বহু স্কুল থেকে গিয়েছে তালিকার বাইরে। মেদিনীপুরের এক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকের কথায়, “স্কুলে খেলার সরঞ্জাম দেওয়ার উদ্যোগ নিঃসন্দেহে ভাল। তবে যে স্কুলগুলোর পরিকাঠামো ভাল, পর্যাপ্ত ফাঁকা জায়গা রয়েছে, তাদের অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত ছিল। সংসদ কর্তৃপক্ষের উচিত ছিল পরিকাঠামোর দিক থেকে উন্নত স্কুলগুলোকে আবেদনের সুযোগ দেওয়া। নিদেনপক্ষে এসআই-দের থেকে স্কুলের নামের তালিকা চাওয়া। কারণ, কোন স্কুলের হাল- হকিকত কেমন তা এসআই-রা জানেন।”

কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি, নিয়ম মেনেই স্কুলের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) আমিনুল আহসান বলেন, “যে স্কুলে সীমানা পাঁচিল নেই, সেই স্কুলে খেলনা, দোলনা দেওয়া হবে না। এসআই- রা সব দিক খতিয়ে দেখে রিপোর্ট দিয়েছেন। তারপরই তালিকা চূড়ান্ত হয়।” একই সঙ্গে তাঁর আশ্বাস, “প্রয়োজনে তালিকা আরও একবার খতিয়ে দেখা হবে।’’

Advertisement

জেলা শিক্ষা দফতরের এক সূত্রে খবর, এই প্রকল্পে প্রতিটি স্কুলের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় এক লক্ষ টাকা। অর্থাৎ, পশ্চিম মেদিনীপুরে এই কাজে ব্যয় হবে প্রায় ৯৩ লক্ষ টাকা। অবশ্য কাজটি জেলা থেকে নয়, হবে রাজ্য থেকে। জেলা তালিকা তৈরি করেছে। সেই তালিকা ধরে স্কুলগুলোয় কাজ করবে কলকাতার এক সংস্থা। জানা গিয়েছে, স্কুলের সামনের ফাঁকা জায়গায় থাকবে দোলনা, স্লিপ এবং খেলার সরঞ্জাম। জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান নারায়ণ সাঁতরা বলেন, ‘‘পশ্চিম মেদিনীপুরের ৯৩টি প্রাথমিক স্কুলকে খেলনা-দোলনা দেওয়া হবে। তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।” আর জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) আমিনুল আহসানের বক্তব্য, “স্কুলে খেলনা-দোলনা থাকলে ছেলেমেয়েরাই উপকৃত হবে। স্কুলের প্রতি আগ্রহ বাড়বে।’’

খেলনা, দোলনার টানে স্কুলছুটের হার কতটা কমে, এলাকার আরও বেশি সংখ্যক কচিকাঁচা স্কুলমুখী হয় কি না, সেটাই এ বার দেখার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement