প্রলেপ: তড়িঘড়ি রাস্তা মেরামত ঝাড়গ্রামে। ছবি: দেবরাজ ঘোষ
আসন্ন জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনিক বৈঠকে গুরুত্ব পেতে পারে কৃষি, সেচ, ভূমি, উদ্বাস্তু ও পুনর্বাসন প্রভৃতি দফতরের কাজকর্মের পর্যালোচনা। মুখ্যমন্ত্রীর সফর সংক্রান্ত নির্দেশিকা দেখে এমনই অনুমান প্রশাসনের এক সূত্রের।
মুখ্যমন্ত্রীর জেলা সফর সংক্রান্ত নির্দেশিকা বৃহস্পতিবার দুই জেলায় পৌঁছেছে। আগামী মঙ্গলবার, বিকেল চারটেয় পশ্চিম মেদিনীপুরের প্রশাসনিক বৈঠক হবে খড়্গপুর গ্রামীণে। বুধবার ঝাড়গ্রামের প্রশাসনিক বৈঠক দুপুর দু'টোয় হওয়ার কথা। শুক্রবার থেকে প্রস্তুতি পুরোদমে শুরু হয়েছে। এ দিন খড়্গপুর শহরের উপকন্ঠে চৌরঙ্গী সংলগ্ন বিদ্যাসাগর শিল্পতালুকে প্রস্তাবিত প্রশাসনিক বৈঠকস্থল পরিদর্শন হয়েছে। ছিলেন রাজ্যের ডিরেক্টর অফ সিকিউরিটি বিবেক সহায়, জেলাশাসক রশ্মি কমল, পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার, জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত মাইতি, খড়্গপুরের বিধায়ক প্রদীপ সরকার, মহকুমাশাসক বৈভব চৌধুরী।
২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি মেদিনীপুর থেকে এই স্টেডিয়ামের জন্য অর্থ বরাদ্দ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। খড়্গপুর পুরসভার তত্ত্বাবধানে স্টেডিয়াম গড়ছে পিডব্লিউডি। মাঠ তৈরি হয়ে গেলেও অনেক কাজ বাকি। হয়নি স্টেডিয়ামে পৌঁছনোর রাস্তাও। তাই কোন পথে মুখ্যমন্ত্রী পৌঁছবেন, কোথায় বৈঠকস্থল হবে, কোথায় বসবেন জেলার প্রশাসনিক কর্তারা, এসব খতিয়ে দেখা হয়। জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজিত বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যে স্টেডিয়াম জেলাবাসীকে উপহার দিয়েছিলেন সেই গর্বের স্টেডিয়ামেই মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কোনও সমস্যা হবে না।” বিকেলে বিবেক ঝাড়গ্রামেও যান। জেলা প্রশাসনের সিদো কানহো সভাঘর ও ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়াম পরিদর্শন করেন তিনি। সঙ্গে ছিলেন জেলাশাসক, পুলিশ সুপার, বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা। সূত্রের খবর, করোনা বিধি মানার ক্ষেত্রে হলঘরটি উপযুক্ত নয় বলে মনে করেন বিবেক। শেষে স্টেডিয়ামের মাঠেই প্রশাসনিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ দিন ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ি ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সে প্রশাসন-পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকও করেন বিবেক সহায়।
অন্য বার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশাসনিক বৈঠকে যে ছবি দেখা গিয়েছে, করোনা-কালে তা দেখা যাবে না। বৈঠকস্থলে নির্দিষ্ট সংখ্যক প্রশাসনিক আধিকারিক এবং জনপ্রতিনিধি থাকবেন। সব দফতরের প্রধান সচিবেরাও থাকবেন না। কয়েকজন আধিকারিক এবং জনপ্রতিনিধি জেলা থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেবেন। জানা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মঞ্চে থাকতে পারেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় এবং স্বরাষ্ট্রসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী। তা ছাড়া হয়তো চারজন অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এবং একজন প্রধান সচিব বৈঠকস্থলে থাকবেন। জানা যাচ্ছে, নির্দেশিকায় উল্লেখ রয়েছে যে, কৃষি, সেচ, পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন, ভূমি ও ভূমি সংস্কার, উদ্বাস্তু ও পুনর্বাসন প্রভৃতি দফতরের অতিরিক্ত মুখ্যসচিব এবং প্রধান সচিব বৈঠকে উপস্থিত থাকবেন। বৈঠকে স্বাস্থ্যসচিবের থাকার কথা নেই। তবে স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ আধিকারিক থাকবেন।
বিধানসভা উপ-নির্বাচনের পরে খড়্গপুরের রাবণ ময়দানে শেষবার সভা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে আইসিইউ, ট্রান্সপোর্ট জোন, কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট সেন্টার, স্টেডিয়ামে গ্যালারি ও রাস্তা গড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন তিনি। এখনও অনেক কাজই বাকি। পুরপ্রশাসক তথা বিধায়ক প্রদীপ বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী যে প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন আশা করছি সেগুলি নিয়ে তিনি নিজেই আলোচনা করবেন। স্টেডিয়ামে বৈঠক হওয়ায় দ্রুত রাস্তাটি হয়ে যাবে। আমরা পুরসভার মাধ্যমে চৌরঙ্গী থেকে শিল্পতালুকে যাওয়ার রাস্তার সৌন্দর্যায়ন করে মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাব।”