এগরা শহরে টেট পরীক্ষার ফর্ম তোলার দীর্ঘ লাইন। কৌশিক মিশ্রের তোলা ছবি।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার জন্য ফর্ম দেওয়াকে কেন্দ্র করে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের শাখার সামনে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করা নিয়ে ব্যপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। ব্যাঙ্কের শাখার সামনে দীর্ঘক্ষণ ধরে অপেক্ষার পরেও ফর্ম না পেয়ে বৃহস্পতিবার বিকেল কাঁথির মারিশদায় সড়ক অবরোধ করেন ক্ষুদ্ধ জনতা। সমস্যার কথা স্বীকার করলেও পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ সভাপতি মানসকুমার দাস বলেন, ‘‘এখন জেলার মোট ছয়টি স্থান থেকে ফর্ম হচ্ছে। বৃহস্পতিবার যেসব প্রার্থীরা ব্যাঙ্কের শাখার সামনে লাইনে দাঁড়িয়ে ফর্ম পাননি তাঁরা ব্যাঙ্কের রসিদ নিয়ে শুক্রবার জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদ অফিসে এসে ফর্ম তুলতে পারবেন।’’
বুধবারের মত বৃহস্পতিবারও জেলার যে সব স্থানে ব্যাঙ্কের শাখা থেকে ফর্ম চলছিল সেখানের লম্বা লাইন সামলাতে হিমসিম খেতে হয় পুলিশকে। এ দিন তমলুকে জেলাশাসকের অফিসের কাছে ওই ব্যাঙ্কের শাখা ছাড়াও নন্দকুমারে ওই ব্যাঙ্কের শাখায় ফর্ম দেওয়া শুরু হয়। কিন্তু কোন শাখাতেই ব্যাঙ্কের নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লাইনে দাঁড়ানো যুবক-যুবতীদের সবাই ফর্ম পায়নি বলে অভিযোগ। ভিড় সামলাতে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।
একই ছবি হলদিয়ার চৈতন্যপুরে ও কাঁথির মারিশদা শাখায়। মারিশদা শাখায় লাইনে দাঁড়িয়েও ফর্ম না পাওয়ায় দিঘা-মেচেদা সড়ক অবরোধ করেন ক্ষুব্ধ জনতা। পরিস্থিতি সামলাতে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়। সোমবার থেকে জেলায় তমলুক, হলদিয়া, কাঁথি ও এগরা মহকুমায় ওই রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের মাত্র চারটি শাখা থেকে ফর্ম দেওয়া শুরু হয়েছিল। কিন্তু প্রতিটি শাখাতেই ফর্ম নিতে আসা কয়েক হাজার আবেদনকারীদের ভিড়ে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় বলে অভিযোগ। বুধবার তমলুক শাখায় ফর্ম না পেয়ে ক্ষুদ্ধ যুবক-যুবতীরা হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক অবরোধ করেছিলেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে বৃহস্পতিবার থেকে জেলার আরও দুটি জায়গায় ফর্ম দেওয়া হলেও প্রতিটি স্থানেই আবেদনকারীর ব্যাপক ভিড় জমে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয় বলে অভিযোগ।
অন্য দিকে, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের টেট পরীক্ষার ফর্ম বিলির কেন্দ্র বাড়ানো হল পশ্চিম মেদিনীপুরে। এত দিন জেলার চারটি মহকুমার প্রতিটিতে একটি করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ফর্ম দেওয়া হচ্ছিল। তবে বৃহস্পতিবার মেদিনীপুর শহরে আরও একটি এবং খড়্গপুর মহকুমায় আরও দু’টি ব্যাঙ্ক থেকে ফর্ম দেওয়া শুরু হয়েছে। অর্থাত্, জেলায় প্রাথমিক টেট- এর ফর্ম মিলছে সব মিলিয়ে সাতটি ব্যাঙ্ক থেকে। মেদিনীপুর শহরের সিপাইবাজার, খড়্গপুর মহকুমায় বেলদা ও বালিচকের একটি করে ব্যাঙ্কে এ দিন থেকে ফর্ম দেওয়া শুরু হয়। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি নারায়ণ সাঁতরা বলেন, “আগে চারটি ব্যাঙ্ক থেকে ফর্ম দেওয়া হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার থেকে আরও তিনটি ব্যাঙ্ক থেকে ফর্ম দেওয়া শুরু হয়েছে। ফলে, ছাত্রছাত্রীদের অনেকটা সুরাহা হয়েছে।’’ পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি উত্তম সাঁতরা বলেন, “ফর্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাঙ্কের সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত ছিল। ছাত্রছাত্রীদের এ ভাবে সমস্যায় ফেলা হচ্ছে কেন বুঝতে পারছি না।’’