তালাবন্দি চন্দ্রি-২ এর বিট অফিসার। নিজস্ব চিত্র।
ঝাড়গ্রাম: লোকালয়ে হাতির সমস্যা ঠেকাতে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠক ডেকেও এলেন না ডিএফও। তার জেরে ক্ষোভ ছড়াল ঝাড়গ্রাম ব্লকের বিভিন্ন বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যদের মধ্যে। বুধবার বিরিহাঁড়িতে চন্দ্রি বিট অফিসে সংশ্লিষ্ট বিট অফিসারকে আটকে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা।
দিন কয়েক আগে নেদাবহড়া অঞ্চলের কেউদিশোলের জঙ্গলে হাতি দেখতে ঢুকে দাঁতালের হানায় এক তরুণ পর্যটকের মৃত্যু হয়। ওই ঘটনার পর মৃতদেহ আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দারা। আটকে পড়েছিলেন লোধাশুলি রেঞ্জ অফিসার-সহ বেশ কয়েকজন আধিকারিক। দাবি উঠেছিল, গ্রাম পিছু পাঁচজন যুবককে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে হাতির নজরদারির জন্য বহাল করতে হবে। যাতে এলাকায় হাতি এলে সঙ্গে সঙ্গে খবর দিতে পারেন। পর্যটক বা বহিরাগতরা জঙ্গলে ঢুকতে গেলে বাধা দেবেন। ঝাড়গ্রাম ডিভিশনের বিভাগীয় বন আধিকারিক (ডিএফও) শেখ ফরিদ ফোনে ওই দাবি নিয়ে আলোচনার আশ্বাস দেওয়ার পরে বিক্ষোভ উঠেছিল। বিক্ষোভকারীদের দাবি, ডিএফও নিজেই জানিয়েছিলেন যে বুধবার দুপুর ১টা নাগাদ চন্দ্রি-২ বিট অফিসে আলোচনায় বসবেন তিনি।
সেই মতো এ দিন ১৪টি বন সুরক্ষা কমিটির প্রায় ২৫ জন সদস্য নির্দিষ্ট সময়ে ওই বিট অফিসে আসেন। ডিএফওকে সংবর্ধনা দেওয়ার জন্য ফুলের তোড়াও এনেছিলেন তাঁরা। কিন্তু ডিএফও তো দূরের কথা, প্রায় দু’ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও কোনও বন আধিকারিক সেখানে আসেননি। উপস্থিত বন সুরক্ষা কমিটির সদস্যরা লোধাশুলি রেঞ্জ অফিসারকে ফোন করেন। তিনি তখন তাঁর অফিসে আসতে বলেন অথবা ডিএফও অফিসে যেতে বলেন। কিন্তু ডিএফওকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। তারপরেই ক্ষুব্ধ বনসুরক্ষা কমিটির সদস্যরা চন্দ্রি-২ বিট অফিসার প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়কে তাঁর কোয়ার্টারে তালা লাগিয়ে দেন। বিকেল পাঁচটা নাগাদ সেই তালা খোলা হয়। ওই বিট অফিসার সরাসরি বলেন, ‘‘আমাদের দফতরের গাফিলতির জন্যই আমাকে তালা লাগিয়েছে। দুপুর একটার সময়ে দফতরের পক্ষ থেকেই চন্দ্রি বিটে বৈঠক ডাকা হয়েছিল। আমাকে যেন বদলি করে দেওয়া হয়।’’
বন সুরক্ষা কমিটির সদস্য তথা আগুইবনি অঞ্চল তৃণমূলের সভাপতি জগদীশ মাহাতো বলেন, ‘‘হাতির সমস্যার সমাধানের জন্য ডিএফও নিজেই আলোচনার সময় দিয়েছিলেন। ২৫ জনকে থাকতে বলা হয়েছিল। কিন্তু উনি আসেননি। আমরা শান্তিপূর্ণ আলোচনা চেয়েছিলাম। কিন্তু উনারা করলেন না। উনারা কি সমাধান চাইছেন না? বাধ্য হয়েই তালা লাগানো হয়েছে।’’ ডিএফও শেখ ফরিদ ফোন ধরেননি। বন প্রতিমন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদা বলেন, ‘‘আমি বাইরে রয়েছি। ওদের দাবি লিখিত আকারে দিতে বলেছি। আমি দফতরে জানাব।’’