১০০ দিনের প্রকল্পে মাটি কাটার কাজ চলছে। নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে। নিজস্ব চিত্র।
জেলার প্রতিটি ব্লকে ১০০ দিনের কাজের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিল জেলা প্রশাসন। নজরে রাখা হবে প্রতিটি পঞ্চায়েতের ১০০ দিনের কাজের খতিয়ান। এমনটাই জানানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় রয়েছে ২৫ টি ব্লক। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে এই জেলা কিছুটা পিছিয়ে। পরিস্থিতি বুঝে শেষমেশ কড়া পদক্ষেপ করলেন জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাঝি। করোনা পরিস্থিতিতে বহু মানুষ কাজ হারিয়েছেন। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে তাঁদের যাতে রুজি রোজগারের ব্যবস্থা করে দেওয়া যায় সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই পথে হেঁটেই ১০০ দিনের কাজের ওপর গুরুত্ব দিল জেলা প্রশাসন। একদিনে জেলায় মোট ১ লক্ষ ২০০০০ কর্ম দিবস তৈরির লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ মাসে ৩৬ লক্ষ কর্মদিবস তৈরি করতে হবে। জেলা প্রশাসনের তরফে প্রত্যেক বিডিওর কাছে এই মর্মে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। ব্লক ভিত্তিক কর্মদিবস নির্দিষ্ট করে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। চলতি মাসের প্রথম দিন থেকেই এই উদ্যোগ শুরু করতে বলা হয়েছে।
রাস্তা তৈরি, বনসৃজন, ম্যানগ্রোভ রোপণ, ভূমি উন্নয়ন, পুকুর খনন-সহ একাধিক কাজ রাখা হয়েছে ১০০ দিনের প্রকল্পে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, ৩০ দিন পর কাজের মূল্যায়ন করা হবে। কত কর্মদিবসে কত সম্পদ তৈরি হল তা নথিভুক্ত করা হবে। যে পঞ্চায়েত লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবে তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে। ১০০ দিনের কাজে জোর দেওয়া হবে বনসৃজন প্রকল্পে। ১০০টি গাছের মধ্যে ৯০টি গাছ বাঁচিয়ে রাখতে পারলে সেই দল বা ব্যক্তি প্রশাসনের তরফে পুরো টাকা পাবেন। কিন্তু ৩০টি গাছও যদি না বাঁচে সে ক্ষেত্রে রক্ষণাবেক্ষণকারী দল বা ব্যক্তিকে তা দেওয়া হবে না।
এই লক্ষ্যমাত্রা শুধুমাত্র এক মাসের জন্য নয়। জেলা প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, গত ৫-৬ মাস তেমন কোনও কাজ হয়নি। কাজের গতি বাড়াতেই এই সিদ্ধান্ত। শনিবার বিডিওদের অনেকেই পঞ্চায়েত প্রধান দের নিয়ে বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে জেলা প্রশাসনের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এক বিডিওর কথায়, ‘‘পঞ্চায়েত প্রধানদের সহযোগিতা পেলে এটা খুব একটা কঠিন কাজ নয়। ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে প্রচুর মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যাবে। তবে এখন বর্ষাকাল। তাই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করাটা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। তবে আমাদের তরফে চেষ্টার কসুর হবে না।’’
জেলাশাসক পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘১০০ দিনের কাজে সমস্ত ব্লককে লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করলে পুরস্কার, আর না হলে জুটবে তিরস্কার। আশা করছি এর ফলে প্রচুর মানুষ কাজ পাবেন।’’