অভিযানের পর দিঘায় বসেনি ভাজা মাছের দোকান। বৃহস্পতিবার। ছবি: সোহম গুহ।
চোখের সামনে বেসনে ডুবিয়ে ভাজা হচ্ছে ‘টাটকা’ মাছ। আর সেই মাছের টানেই মজছেন শয়ে শয়ে পর্যটক। অথচ সেই মাছের মাধ্যমেই যে মারণ বিষ ঢুকছে শরীরে। সব জেনেও উদাসীন ছিল প্রশাসন। আনন্দবাজারে এই সম্পর্কিত খবর প্রকাশিত হওয়ার পরেই টনক নড়ে প্রশাসনের। বুধবার রাতে দিঘার সৈকতে রাসায়নিক মেশানো মাছ ভাজা ও রং করা মুরগির মাংস বিক্রি বন্ধ করতে অভিযান চালানো হয়। অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু পরিমাণে রাসায়নিক মেশানো মাছও পরীক্ষার জন্য বাজেয়াপ্ত করা হয়।
রামনগর-১ ব্লকের বিডিও অনুপম বাগ জানান, গুণগত মানের পরীক্ষায় আটক করা মাছ ভাজা, সি-ফুডে ভেজাল ও রাসায়নিক মিশ্রণ রয়েছে বলে প্রমানিত হলে ভাজা মাছ বিক্রেতাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাঁথির সহকারী মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক চন্দ্রশেখর মাইতি জানান, দিঘায় ভেজাল ও রাসায়নিক মেশানো মাছ ভাজা বিক্রি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরই জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে বিশেষ দল তৈরি করে অভিযান চালানোর সিধান্ত নেওয়া হয়।
কাঁথির মহকুমাশাসক রিনা নিরঞ্জনের নির্দেশে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কাঁথির ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট বিক্রম চট্টোপাধ্যায়, বিডিও অনুপম বাগ, রামনগর-১ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক পূর্ণেন্দু বালা ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের ফুড সেফটি অফিসার কালীপদ জানাকে নিয়ে বিশেষ দল গঠন করা হয়। পুলিশকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার দিঘার সৈকতে বেআইনি ও অবৈধভাবে বিক্রি হওয়া বিভিন্ন মাছ ভাজার দোকানগুলিতে অভিযান চালানো হয়।
অবাধে বাসি মাছ ভাজা বিক্রি করার অভিযোগ তো আছেই। একইসঙ্গে মাছ ভাজা লোভনীয় করার জন্য ও পচন ঠেকাতে অবাধে মাছে ফর্মালিন মেশানোরও অভিযোগ উঠে। এই সব মাছ ভাজা, সি-ফুড খেয়ে পর্যটকদের অসুস্থ হওয়ার ঘটনা ঘটে। যদিও এতদিন নীরবই ছিল প্রশাসন। অবশেষে প্রশাসনের অভিযানে খুশি স্থানীয় বাসিন্দারাও। দিঘার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত সরকারি চিকিৎসক অলোক মিশ্র, নিউদিঘার এনটু সেক্টরের বাসিন্দা গৃহবধূ মনিকা মাহাতো বলেন, ‘‘আরও আগেই প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া এ ধরনের অভিযান করা উচিত ছিল। অভিযান শুরু হওয়ায় ভেজাল মাছ ভাজা বিক্রি বন্ধ হবে বলেই আশা করছি।’’