গাছের পাট্টা বিলি করে মহিলাদের স্বনির্ভর করার উদ্যোগ কাঁথিতে

মহিলাদের স্বনির্ভর করা এবং এলাকায় সবুজায়ন বাড়াতে বৃক্ষ পাট্টা বিলি শুরু হয়েছিল। ওই প্রকল্পে মহিলাদের একাধিক চারাগাছ দেওয়া হয় এবং সেই চারাগাছের যত্ন করে মহিলারা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পান। গাছ বড় হলে, তা বিক্রি করে বিক্রির অর্থের ৭৫ শতাংশ পাবেন সংশ্লিষ্ট মহিলা এবং বাকি অর্থ যাবে পঞ্চায়েতের তহবিলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কাঁথি শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০২:৫০
Share:

দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয় চত্বরে চলছে বৃক্ষরোপণ। ছবি: শান্তনু বেরা।

জনপ্রিয় হচ্ছে কাঁথি-৩ নম্বর ব্লকে বৃক্ষ পাট্টা বিলি। অন্তত তেমনই জানাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন।

Advertisement

মহিলাদের স্বনির্ভর করা এবং এলাকায় সবুজায়ন বাড়াতে বৃক্ষ পাট্টা বিলি শুরু হয়েছিল। ওই প্রকল্পে মহিলাদের একাধিক চারাগাছ দেওয়া হয় এবং সেই চারাগাছের যত্ন করে মহিলারা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পান। গাছ বড় হলে, তা বিক্রি করে বিক্রির অর্থের ৭৫ শতাংশ পাবেন সংশ্লিষ্ট মহিলা এবং বাকি অর্থ যাবে পঞ্চায়েতের তহবিলে।

ওই প্রকল্পে সাড়া পড়েছে কাঁথি-৩ নম্বর ব্লকে। ওই পঞ্চায়েত সমিতির বিভিন্ন গ্রামে ঘুরলে চোখে পড়বে রাস্তার দু’দিকে সার দিয়ে লাগানো গাছের চারা। আবার কোথাও নির্দিষ্ট জায়গা জুড়ে রয়েছে আকাশমণি, ইউক্যালিপ্টাস, ঝাউ, সুপারি, আমবাগান। ওই সব চারাগাছ দেওয়া হয়েছে বৃক্ষ-পাট্টা প্রকল্পে। প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই ব্লকের ৮টি অঞ্চলের ১৪৭টি গ্রামে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ চারাগাছ লাগানো হয়েছে। উপকৃত হয়েছেন অন্তত আড়াই হাজার মহিলা।

Advertisement

ওই প্রকল্পের পরিষেবা পেয়েছেন বৈহিত্রকুণ্ডা গ্রামের দীপালি বারিক। তিনি বলেন, ‘‘আমরা বৈহিত্রকুণ্ডা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ফুলের গাছ লাগিয়েছি। এতে স্কুলের সৌন্দৰ্য্য যেমন বাড়বে, তেমন আমরাও আর্থিকভাবে লাভবান হব।’’ বাঘাদাড়ি গ্রামের মানসী মণ্ডল বলেন, “আমরা বাড়িতে এবং খাল পাড়ে গাছ লাগিয়েছি। এই প্রকল্পে আমাদের মত গ্রামীণ মহিলারা স্বনির্ভর হতে পারছেন।’’ উল্লেখ্য, একজন মহিলা একাধিক গাছ রক্ষণাবেক্ষণ করে বছরে গড়ে ১২ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। ওই টাকা কিস্তিতে দেওয়া হবে।

কাঁথি-৩ ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বিকাশ বেজ বলেন, “এই প্রকল্পে ভাল সাড়া মিলেছে। মহিলারা প্রতিটি গাছের পরিচর্যার জন্য প্রতি মাসে দশ টাকা পাবেন। তাই গাছগুলোকে যত্ন করে বাঁচিয়ে রাখা ও বড় করে তোলার জন্য মহিলারা খুব আন্তরিক ভাবে এগিয়ে এসেছেন।’’

প্রসঙ্গত, কাঁথি-৩ পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগে ওই প্রকল্পে ভাজাচাউলিতে আমবাগান গড়ে উঠেছে। সেখানে প্রায় ২০০টি আম গাছ লাগানো হয়েছে। কুমিরদাতে তৈরি হয়েছে গোলাপ ফুলের বাগান। কুসুমপুর পঞ্চায়েত এলাকায় বিভিন্ন স্কুলে লাগানো হয়েছে ফল ও ফুলের গাছ। আবার দেশপ্রাণ মহাবিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে লাগানো হয়েছে সুপারির গাছ।

বৃক্ষ পাট্টা প্রকল্পে কাঁথি-৩ এর বিডিও নূর মহম্মদ বলেন, ‘‘এই ব্লক জেলায় সেরা কাজ করেছে। জব কার্ড হোল্ডার, এমন ২০ শতাংশ মহিলা এতে লাভবান হয়েছেন। প্রকল্প চলছে। তাতে সাফল্য আসছে।’’

কাঁথির মহকুমাশাসক শুভময় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সব ব্লকেই বৃক্ষ পাট্টা বিলি হয়েছে। তবে কাঁথি ৩ ব্লকের সাফল্য সবচেয়ে বেশি। ওই এলাকার আমবাগান পরিদর্শন করেছি। বেশ ভাল।’’ মহকুমাশাসকের কথায়, ‘‘প্রকল্পটি সাফল্যের সঙ্গে শেষ করতে পারলে কাঁথি ৩ ব্লক, অন্য ব্লকের কাছে মডেল হয়ে থাকবে। এমন প্রকল্প আরও বৃহৎ স্কেলে করা যাবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement