ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রায় অনেকটাই পিছিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা। তাই লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে প্রচার বাড়াতে চাইছে জেলা প্রশাসন। আর সেই কাজে এ বার সামিল করা হল রেশন ডিলার, আশাকর্মী এমনকী স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদেরও। জেলা খাদ্য নিয়ামক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “সরকারি সমস্ত দফতরকে সঙ্গে নিয়েই ধান কেনার গতি বাড়ানোয় উদ্যোগী হয়েছি আমরা। আশা করি, এর ফলে নির্দিষ্ট সময়ে ধান কেনার লক্ষমাত্রা পূরণ হবে।” জেলা খাদ্য নিয়ামক আরও জানান, চলতি বছরে জেলায় চার লক্ষ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৪৫ হাজার মেট্রিক টন ধান কেনা হয়েছে। জেলা পরিষদের সভাধিপতি উত্তরা সিংহ হাজরা বলেন, “ধান কেনার গতি বাড়াতে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে প্রচারেও।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সরকারি উদাসীনতা, নোট বাতিল-সহ নানা কারণে চলতি মরসুমে সরকারি নির্ধারিত মূল্যে ধান কেনা দেরিতে শুরু হয়েছিল। ফলে স্থানীয় ক্রেতারা (ফড়ে) চাষিদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধান কিনে নিচ্ছেন। উপায় না থাকায় চাষিরাও ফড়েদের হাতেই তাঁদের ফসল তুলে দিতে বাধ্য হচ্ছেন। স্বাভাবিক ভাবেই সরকারি ধান কেনার গতিতে ভাটা পড়ছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “জেলায় সরকারি শিবিরগুলি মাছি তাড়াচ্ছে। বিষয়টি জেলাশাসকের নজরে আসার পরই প্রচারে জোর দেওয়া হয়েছে।” সূত্রের খবর, সম্প্রতি জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা তাঁর দফতরে বৈঠক করেন। সেখানে ধান কেনার অগ্রগতি এবং বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়।
খাদ্য দফতর সূত্রে খবর, এ বার নতুন নিয়মে একই দিনে উপযুক্ত প্রমাণ দেখিয়ে নথিভুক্ত করার পরই সরাসরি ধান বিক্রির সুযোগ মিলবে। চাষিদের অ্যাকাউন্টে যাতে ওই টাকা দ্রুত ঢোকে, তার ব্যবস্থাও করা হবে। চাষিদের ঘরে ঘরে প্রচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই কাজে যুক্ত করা হচ্ছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য, রেশন ডিলার, আশাকর্মী সহ জন-প্রতিনিধিদের। এছাড়াও রেশন দোকানে উপভোক্তারা এলে সেখানেও প্রচার করবেন ডিলাররা। বাড়ানো হয়েছে শিবিরের সংখ্যাও। এতদিন ২৯টি ব্লকে ৩২ টি স্থায়ী ধান বিক্রয় কেন্দ্র এবং গোটা কুড়িক সমবায়ে ধান কেনা হত। এ বার ৮০টি সমবায় ধান কিনবে। ইতিমধ্যে ৬১টি সমবায় ধান কেনা শুরু করে দিয়েছে। চাষিরা স্থায়ী বিক্রয় কেন্দ্রগুলিতে ১৪৯০ টাকা এবং সমবায়গুলিতে ১৪৭০ টাকা (প্রতি কুইন্টাল) দরে ধান বিক্রি করতে পারবেন। একজন চাষি সর্বনিম্ন ৪৫ কুইন্ট্যাল এবং সর্বাধিক ৯০ কুইন্ট্যাল ধান বিক্রি করতে পারবেন।