Adenovirus

অ্যাডিনোভাইরাসে বাড়ছে আশঙ্কা, সমীক্ষার নির্দেশ আশা কর্মীদের  

শহরের শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকার বাসিন্দা পারমিতা ঘোষ বলেন, “আমার ছেলের বয়স আট। অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে অনেক কথাই শুনছি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৮:৩২
Share:

বাড়ছে অ্যাডিনোভাইরাস। প্রতীকী চিত্র।

অ্যাডিনোভাইরাসের সংক্রমণে জেলায় প্রথম মৃত্যু হয়েছে রেলশহর খড়্গপুরে। মৃত কিশোরীর বাড়ির এলাকায় সমীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হল স্বাস্থ্যকর্মীদের। একইসঙ্গে উপসর্গ থাকা রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করতে শহরের আশাকর্মীদের হাতে ধরানো হয়েছে বাংলায় লেখা নির্দেশিকা। বৃহস্পতিবার জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে এমনই খবর জানা গিয়েছে।

Advertisement

বুধবারই অ্যাডিনোভাইরাসে মৃত্যু হয় রেলশহরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মিলন মন্দির এলাকার বছর তেরোর উর্জস্বতী রায়চৌধুরীর। জন্ম থেকে ‘স্পাইনাল মাস্কুলার অ্যাট্রফি’ নামে মজ্জার রোগে আক্রান্ত ছিল সে। করোনা পর্বে সতর্ক ছিল পরিবার। তবে এ বার সতর্ক হয়েও সংক্রমণের ধাক্কা এড়াতে পারেনি ওই কিশোরীর পরিবার। শেষমেশ অ্যাডিনো সংক্রমণেই (ডেথ সার্টিফিকেট অনুযায়ী) মৃত্যু হল উর্জস্বতীর।

বৃহস্পতিবারই উর্জস্বতীর বাড়ি এলাকায় স্বাস্থ্যকর্মীরা গিয়ে সমীক্ষা চালিয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। খড়্গপুর শহরের আশাকর্মীদের দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকা। সেখানে জ্বর, শ্বাসকষ্ট, সর্দির মতো অ্যাডিনোভাইরাসের উপসর্গে ভুগতে থাকা রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গী বলেন, “খড়্গপুরের ওই কিশোরীর মৃত্যুর বিষয়টি আমাদের এখনও সরকারি ভাবে জানানো হয়নি। তবে আমরা কোনও ফাঁক রাখতে চাইছি না। তাই ওই কিশোরীর বাড়ি এলাকায় আশাকর্মীদের সমীক্ষা চালাতে বলেছি। কারও জ্বর, সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ রয়েছে কি না দেখা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, অন্য এলাকাতেও কীভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে তা নিয়ে আশাকর্মীদের বাংলায় নির্দেশিকা ধরানো হয়েছে। মৃত কিশোরী উর্জস্বতীর বাবা উত্তীয় রায়চৌধুরী বলেন, “মেয়ে কীভাবে অ্যাডিনো সংক্রমিত হয়েছিল সেটা বুঝতে পারলাম না। ৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম জ্বর এসেছিল। তার দিন পাঁচেক আগে পর্যন্ত স্কুলে গিয়েছিল। তার পরে হাসপাতালেই বাকি সময় কেটেছে।” মহকুমা হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ অরবিন্দ মাহাতো বলেন, “শিশুর জ্বর, সর্দি, কাশির মতো উপসর্গ থাকলে গাফিলতি না করে হাসপাতালে নিয়ে আসা উচিত। সকলে মাস্ক ব্যবহার করলে ভাল।”

Advertisement

শহরের শ্রীকৃষ্ণপুর এলাকার বাসিন্দা পারমিতা ঘোষ বলেন, “আমার ছেলের বয়স আট। অ্যাডিনোভাইরাস নিয়ে অনেক কথাই শুনছি। কিন্তু বাস্তবে তো কোনও বিধি-নিষেধ দেখতে পারছি না। উদ্বেগ তো বাড়ছেই!” স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, শুধুমাত্র খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালেই বুধবার পর্যন্ত ১২ জন শিশু ‘এআরআই’ উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ছিল। ৪ জনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজে ‘রেফার’ করা হয়। কারণ খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে শিশুদের জন্য ‘ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট বা ‘সিক নিওনেটাল কেয়ার ইউনিট’ নেই। বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ‘এআরআই’ উপসর্গ নিয়ে ১০ জন শিশু ভর্তি ছিল। রাতের দিকে সেই সংখ্যা বাড়তে পারে বলে খবর। গত ২০ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৩ জন শিশু ‘এআরআই’ উপসর্গ নিয়ে ভর্তি ছিল এখানে।

ওই হাসপাতালের সুপার উত্তম মান্ডি বলেন, “চিকিৎসকদের নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। মাস্ক ব্যবহারের অনুরোধ করা হচ্ছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement