সাধারণের অভাব-অভিযোগ শুনতে সোহমের ‘দরবারে বিধায়ক’। নিজস্ব চিত্র
তিনি রাজ্যের শাসক দলের তারকা বিধায়ক। চণ্ডীপুরের বিধায়ক হিসেবে তাঁর একবছর পূর্ণ হয়েছে। এলাকার উন্নয়নের পাশাপাশি বাসিন্দাদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ গড়ে তুলতে এবার জনতার দরবার করতে চলেছেন অভিনেতা-বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী। আজ, সোমবার বিকেলে চণ্ডীপুর ফুটবল ময়দানে ‘দরবারে বিধায়ক’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন সোহম। ওই দরবারে হাজির হতে বিধানসভা এলাকার বাসিন্দাদের আমন্ত্রণ জানাতে চিঠি, ব্যানার ছাড়াও মাইক প্রচার চালানো হয়েছে। আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে জেলার সমস্ত দলীয় বিধায়ক, দুই সাংগঠনিক জেলা সভাপতি এবং জেলাপরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাদের।
দলীয় সূত্রে খবর, বিধানসভা নির্বাচনের আগে সাধারণ মানুষের নানা অভিযোগ ও সমস্যার কথা শুনতে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচি চালু করেছিল তৃণমূল। যার মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে সাধারণ মানুষ তাঁদের নানা দাবি-দাওয়া জানানোর পাশাপাশি দলের একাংশ নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর সুযোগ পেয়েছিলেন। ফলে পরবর্তী সময়ে প্রশাসনিক ও দলীয়ভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ করা হয়েছিল। একই ভাবে নিজের বিধানসভা এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলে এলাকার বিভিন্ন সমস্যা ও উন্নয়নের দাবি-দাওয়া শোনার পাশাপাশি দলের বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের মতামত শোনার জন্য জনতার দরবার করতে উদ্যোগী সোহম। উল্লেখ্য, চণ্ডীপুরের বিধায়ক নির্বাচিত হওয়ার পর সোহম বাসিন্দাদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা-সহ তাঁদের নানা প্রয়োজনে সাহায্যের জন্য গত বছরই চণ্ডীপুর বাজারে বিধায়ক কার্যালয় চালু করেছিলেন। ওই অফিসে নিয়মিত আসতেন তাঁর ব্যক্তিগত সহায়ক সজল মুখোপাধ্যায়। কিন্তু গত ফেব্রুয়ারি মাসে সোহম সজলের বিরুদ্ধে বিশ্বাসভঙ্গ, আর্থিক প্রতারণা ও জুলুমবাজির অভিযোগ করেন পুলিশের কাছে। অভিযোগের ভিত্তিতে চণ্ডীপুর থানার পুলিশ সজলকে গ্রেফতার করেছিল। সোহম বলেছিলেন, ‘‘সজলের বিরুদ্ধে এলাকার লোকজনের সঙ্গে বিভিন্ন রকমের প্রতারার অভিযোগ আসছিল আমার কাছে। আমি এই ধরনের কাজের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে। তাই আইনি ব্যবস্থা নিয়েছি।’’
যদিও সজলের গ্রেফতারে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বকে বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছিল বলে অভিযোগ। দলীয় সূত্রের খবর, ওই ঘটনার পরে সোহম নিজে এলাকার বাসিন্দাদের সাথে সরাসরি কথা বলে তাঁদের সমস্যা ও দাবির কথা শোনার মাধ্যমে জনসংযোগ বাডাতে উদ্যোগী হন। তারই ফল ‘দরবারে বিধায়ক’ কর্মসূচি। কর্মসূচিতে চণ্ডীপুর বিধানসভা এলাকার ১০টি পঞ্চায়েত ও ভগবানপুর-১ ব্লকের ৬টি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়াও কর্মসূচিতে থাকবেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র ও মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি সহ জেলার তৃণমূল বিধায়ক, দলের দুই সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সহ অন্যান্য নেতৃত্ব।
চণ্ডীপুর ব্লক তৃণমূল সভাপতি স্নেহাংশু পণ্ডিত বলেন, ‘‘বিধায়ক এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে সরাসরি বিভিন্ন অভিযোগ ও দাবি সহ মতামত শোনার জন্যই ‘দরবারে বিধায়ক’-এর আয়োজন করেছেন। এর জন্য ব্যানার, মাইক প্রচার করা হয়েছে। কর্মসূচি ঘিরে ব্যাপক উৎসাহ দেখা গিয়েছে।’’