—প্রতীকী ছবি।
বন্দরের জেনারেল ম্যানেজারের গাড়ি নিয়ে একুশে জুলাই কলকাতার ধর্মতলায় শহিদ সমাবেশে যাওয়ার অভিযোগ উঠল জেলা তৃণমূলের এক নেতার বিরুদ্ধে। জেনারেল ম্যানেজার নিরাপত্তার প্রশ্নে অভিযোগ তুলে বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিয়েছেন।
ঘটনায় রাজৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে। গেরুয়া শিবিরের অভিযোগ, এই স্বেচ্ছাচারিতাই তৃণমূলের সংস্কৃতি। তবে ওই তৃণমূল নেতার সাফাই, গাড়িতে তিনি যখন গিয়েছিলেন, তখন বন্দর আধিকারিকের পদ লেখা বোর্ড ঢাকা দেওয়া ছিল।
জানা গিয়েছে, হলদিয়া বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার (ইঞ্জিনিয়ারিং) মানস মণ্ডলের জন্য একটি বেসরকারি সংস্থার গাড়ি বরাদ্দ রয়েছে। ওই সংস্থার সঙ্গে বন্দরের চুক্তি রয়েছে যে ২৪ ঘন্টার মধ্যে যে কোনও জিএমের প্রয়োজনে ওই গাড়ি দিতে হবে। অভিযোগ, গত একুশে জুলাই ধর্মতলার সভায় হলদিয়া থেকে ওই গাড়িতেই এসেছিলেন তৃণমূলের প্রাক্তন শ্রমিক নেতা তথা বর্তমান দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলা কমিটির সম্পাদক শিবনাথ সরকার। ফলে, ওই দিন সকালে বন্দরের কর্তা ফোন করে ডাকলে চালক জানিয়ে দেন, গাড়ি গ্যারাজে নেই। পরে বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার জানতে পারেন তাঁর জন্য বরাদ্দ গাড়িতে দলের পতাকা টাঙিয়ে কলকাতা গিয়েছেন ওই তৃণমূল নেতা।
বেসরকারি সংস্থাটির তরফে বন্দর কর্তাকে অন্য গাড়ি পাঠানো হলেও তিনি তাতে চড়তে রাজি হননি। ২২ জুলাই নির্ধারিত গাড়ি তাঁকে নিতে গেলে তিনি সেই গাড়িতেও ওঠেননি। চালককে জানিয়ে দেন, তাঁর ওই গাড়ি প্রয়োজন নেই। চালক রাজু দাস মানছেন, ‘‘জেনারেল ম্যানেজার (ইঞ্জিনিয়ারিং)-এর গাড়ি এক তৃণমূল নেতা শহিদ সভায় নিয়ে গিয়েছিলেন। তারপর এক সপ্তাহ হয়ে গেলেও আর ওই গাড়ি ব্যবহার করেননি জিএম। গাড়িটি গ্যারাজেই রয়েছে।’’
ইতিমধ্যে বন্দরের ওই জেনারেল ম্যানেজার (ইঞ্জিনিয়ারিং) মানস জেনারেল ম্যানেজার (এম এস) প্রভীনকুমার দাসকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, তিনি যথেষ্ট নিরাপত্তাহীনতা বোধ করছেন। তাঁর জন্য বরাদ্দ করা গাড়ি বোর্ড-সহ নিয়ে গিয়ে যদি কোনও দুষ্কর্ম করা হয়, তবে তো দায় তাঁর উপরেই বর্তাবে। সেই জন্য তিনি ওই গাড়ি ব্যবহার করছেন না।
বন্দরের তরফে বেসরকারি গাড়ি সংস্থাকে শো-কজ়ের চিঠি ধরানো হয়েছিল। জবাবে তারা জানিয়েছে, হলদিয়ায় ব্যবসা করতে হলে অতীতেও নেতাদের গাড়ি দিতে হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও দিতে হবে।। না হলে ব্যবসা করা যাবে না।
বন্দর কর্তা মানস অবশ্য এ নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘এটা আভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এ নিয়ে সংবাদমাধ্যমে ন্তব্য করব না।’’ তবে বন্দরের জেনারেল ম্যানেজার (এম এস) প্রভীনকুমার দাসের বক্তব্য, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
বন্দরে ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘের নেতা প্রদীপ বিজলীর কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল নেতারা এতটাই নির্লজ্জ হয়ে গিয়েছেন যে বন্দরের জেনারেল ম্যানেজারের গাড়ি নিতেও কিছু মনে হচ্ছে না।’’ আর অভিযুক্ত তৃণমূলের জেলা নেতা শিবনাথের বক্তব্য, ‘‘বেসরকারি সংস্থা থেকে মাঝেমধ্যেই গাড়ি নিই। সে দিন যে গাড়ি দেওয়া হয়েছিল তার বোর্ড ঢাকা দেওয়া ছিল। আমি জানতাম না যে সংস্থাটি বন্দরের জেনারেল ম্যানেজারের গাড়ি দিয়েছে।