মৃত কিশোর। নিজস্ব চিত্র
মুরগি চুরি ঠেকাতে খামারের চারপাশে রাতে বেআইনিভাবে বিদ্যুতের তার বিছিয়ে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ। সকালে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে ভুলে যাওয়ায় লালগড়ের বনপুকুরিয়ায় ঘটল মর্মান্তিক ঘটনা। শুক্রবার সকাল ৭টা নাগাদ ওই তারে পা লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হল গ্রামের এক কিশোরের। মৃতের নাম সনাতন সরেন (১৪)। স্থানীয় হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া সনাতন খামারের পাশের রাস্তা ধরে যাওয়ার সময়ই এই কাণ্ড ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, বনপুকুরিয়ায় যৌথভাবে মুরগি খামার চালান বনকাটি ও ওড়মা গ্রামের দু’জন। রাতে কুকুর, শেয়ালের উপদ্রব হয়। চোরেরাও মুরগি চুরি করে বলে অভিযোগ। তাই খামারের চারপাশে রাতের বেলা বিদ্যুৎবাহী তার বিছিয়ে রাখা হয় বলে স্থানীয়দের দাবি। মৃত সনাতনের বাবা মানিক সরেন বলেন, ‘‘সকালে প্রায়ই ওই পথে ছেলে মাঠে যেত। এদিনও গিয়েছিল।’’ পায়ে তার লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় সনাতন। খবর পেয়ে পরিজনেরা এসে অসাড় সনাতনকে উদ্ধার করে লালগড় প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ দিনই মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়।
লালগড় থানা সূত্রে খবর, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে মৃতের পরিবার এখনও কোনও অভিযোগ করেনি। জানা গিয়েছে, ঘটনার পরে গা ঢাকা দিয়েছেন দুই খামার মালিক। বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থার পশ্চিম মেদিনীপুরের রিজিওন্যাল ম্যানেজার সৌভিক বেরা বলেন, ‘‘বেআইনিভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হবে।’’
গত মে মাসে ঝাড়গ্রাম থানার বামুনিয়াবাঁধ গ্রামেও মুরগি খামারের চারপাশে বিছিয়ে রাখা বিদ্যুৎবাহী তারে পা লেগে এক প্রৌঢ়ার মৃত্যু হয়। ঝাড়গ্রাম জেলায় হাতির হামলা থেকে ফসল বাঁচাতেও একাংশ চাষি রাতে জমির চারপাশে বেআইনি ভাবে বিদ্যুতের তার বিছিয়ে রাখেন। গত কয়েক বছরে সেই তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে একাধিক হাতির মৃত্যু হয়েছে। মানুষেরও প্রাণহানি হয়েছে। গত বছর অক্টোবরে নয়াগ্রামের রাঙ্গিয়াম গ্রামে জমিতে বিছানো তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়। গত দু’বছরে নয়াগ্রাম ও সাঁকরাইলে থানায় এমন ঘটনায় এক মহিলা-সহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।