প্রতীকী ছবি।
পড়ন্ত বিকেলে তাঁরা এলেন। নথি দেখলেন। একটি রাস্তার কিছুটা অংশ গাড়িতে করে গেলেন। কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল ফিরে যাওয়ার পর স্থানীয়েরা বললেন, ‘‘আরও কিছুটা গেলেই রাস্তার আসল চেহারাটা চোখে পড়ত।’’
কেন্দ্রীয় প্রকল্পের কাজ পরিদর্শনে পশ্চিম মেদিনীপুরে এসে পৌঁছল কেন্দ্রীয় দল। সোমবার সকালে কলকাতায় পৌঁছে, দুপুরে দলটি জেলায় আসে। তিন সদস্যের দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন মন্ত্রকের ডিরেক্টর দেবেন্দ্রকুমার। অন্য দুই সদস্য হলেন প্রজেক্ট ডিরেক্টর মীনাক্ষি ত্রিপাঠী, ইঞ্জিনিয়ার রক্ষিত ত্যাগী। ৬ অগস্ট পর্যন্ত দলটির জেলায় থাকার কথা। প্রশাসন সূত্রে খবর, একশো দিনের কাজ পরিদর্শন হবে। পাশাপাশি, আবাস যোজনা, সড়ক যোজনার কাজও পরিদর্শন হবে।
এ দিন বিকেলে পিংলা ব্লক অফিসে পৌঁছয় কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়ণ দফতরের একটি প্রতিনিধি দল। ব্লক অফিসে পৌঁছে ব্লকের আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজ ও সড়ক যোজনার সমস্ত নথি খতিয়ে দেখেন। বিশেষ করে ২০১০-’১১, ২০১৮-’১৯ ও ২০২১-’২২সালের নথির খুঁটিনাটি যাচাই করেন তাঁরা। কথা বলেন বিডিও বিশ্বরঞ্জন চক্রবর্তী, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বীরেন্দ্রকুমার মাইতির সঙ্গে। জলচক গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় আবাস যোজনায় কতজনের নামের তালিকা ছিল ও কতজন তিনটি পর্যায়ে টাকা পেয়েছেন তা দেখে নেন। একইভাবে ব্লকে একশো দিনের কাজে স্বসহায়ক দলগুলিকে দেওয়া ওয়ার্ক অর্ডার, জবকার্ড যাচাই করেন। আজ, মঙ্গলবার পিংলার মালিগ্রাম, পিণ্ডরুই এলাকায় ওই প্রতিনিধিদল যেতে পারেন বলে জানা গিয়েছে। এ দিনও ব্লক অফিস থেকে ফেরার পথে পিংলার কালীতলা থেকে কালুখাঁড়া পর্যন্ত সড়ক যোজনার রাস্তায় এক কিলোমিটার অংশ পর্যন্ত গাড়িতে যান ওই প্রতিনিধিদলটি। এমনকি ওই সড়কের ধারে থাকা কাজের হিসাবের বোর্ডের ছবি তুলে নিয়ে যান।
বিডিও বিশ্বরঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, “কেন্দ্রীয় এই প্রতিনিধি দলটি আমাদের কাছে বিভিন্ন প্রকল্পের নথি দেখতে চেয়েছে। আমরা সেগুলি দেখিয়েছি। আবাস যোজনা, সড়ক যোজনা, একশো দিনের কাজের নথি খতিয়ে দেখেছে। কিছু ক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শও দিয়েছেন।” এ দিন এই কেন্দ্রীয় দল যে সড়ক পরিদর্শন করেছে সেই কালীতলা-কালুখাড়া সড়কের ধারে ডঙলসার বাসিন্দা গোপাল শী। তিনি বলেন, ‘‘এই রাস্তা ২০কিলোমিটার। কালীতলা থেকে ডঙলসা ১২কিলোমিটার এখন রাস্তা ভাল। কিন্তু পরবর্তী ৮কিলোমিটার একেবারে বেহাল। কিন্তু কেন্দ্রীয় দল এক-দু’কিলোমিটার পরিদর্শন করে চলে যাওয়ায় আসল অনুন্নয়নের ছবি তো নজরেই পড়ল না!”
এ দিন পরিদর্শনে জেলা প্রশাসনের তরফে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) কেমপা হোন্নাইয়া, একশো দিনের কাজ প্রকল্পের ডিস্ট্রিক্ট নোডাল অফিসার বিজয় সরকার প্রমুখ। পরিদর্শন শেষে দিল্লি ফিরে গিয়ে রিপোর্ট জমা দেবে দলটি। ৪ থেকে ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতে সরেজমিনে পরিদর্শনে যাবে তারা।
কেন্দ্রীয় দল গোড়াতেই পিংলায় কেন? জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, "দলটিই পিংলায় যেতে চেয়েছিল। জানিয়েছিল, পিংলার জলচক পরিদর্শন করবে। কোন কোন এলাকায় যাবে, সে সিদ্ধান্ত নেয় পরিদর্শক দলই। এখানে আমাদের মতামতের কোনও ব্যাপার থাকে না।"