জেলায় শুরু হয়েছে বুলবুলে ক্ষতিপূরণের আবেদনপত্র জমা নেওয়ার কাজ।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে ক্ষতিগ্রস্তেরা যাতে যথাযথ ভাবে ক্ষতিপূরণ পান, সে জন্য পূর্ব মেদিনীপুরে তৈরি হল নজরদারি কমিটি।
নভেম্বরের ৯ ও ১০ তারিখ ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের দাপটে পূর্ব মেদিনীপুরের ৩০১২টি মৌজাকে ক্ষতিগ্রস্ত ঘোষণা করেছে জেলা প্রশাসন। ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারের বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে জেলার জন্য প্রায় ২০৬ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বাংলা ফসল বিমা, কৃষক বন্ধুর মাধ্যমে অনুদান দেওয়ার পাশাপাশি কৃষকদের দেওয়া হবে ক্ষতিপূরণের টাকা। সেই ক্ষতিপূরণের আবেদনপত্রগুলি যাতে যথাযথ ভাবে কৃষকেরা পূরণ করেন, সে জন্য জেলার সব ব্লক কৃষি আধিকারিকদের নিয়ে শুক্রবার বৈঠক হয়েছে জেলায়। কোনও কৃষক যাতে ক্ষতিপূরণে বঞ্চিত না হন, সে জন্য নির্দেশিকা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। পুরো প্রক্রিয়াটি নিখুঁতভাবে পরিচালনার জন্য ৯ সদস্যের একটি নজরদারি কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, জেলার ২৫ টি ব্লকেই এই প্রক্রিয়া তদারক করবে ওই কমিটি।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কৃষি দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর আশিস বেরা বলেন, ‘‘ঘোষিত ক্ষতিগ্রস্ত মৌজাগুলির কোনও কৃষক যাতে ক্ষতিপূরণ থেকে বঞ্চিত না হন সে জন্য আমরা সব রকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। এই বিষয়ে বৈঠকে নিয়ম বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ধাপে ধাপে আবেদনপত্র জমা নেওয়ার পাশাপাশি ধাপে ধাপে কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা দেওয়া হবে।’’
ইতিমধ্যে জেলায় শুরু হয়েছে বুলবুলে ক্ষতিপূরণের আবেদনপত্র জমা নেওয়ার কাজ। শুক্রবার ব্লক কৃষি আধিকারিকদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, কোনও কৃষককেই আবেদনের ফর্ম বাড়ি থেকে পূরণ করে আনার সুযোগ দেওয়া হবে না। ব্লক অফিস থেকে আবেদনপত্র তুলে পূরণ করে সঙ্গে সঙ্গে জমা দিতে হবে। আবেদনের জন্য কৃষকের ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, ব্যাঙ্কের পাশবইয়ের জেরক্স ও জমির সাম্প্রতিকতম পর্চা বা রেকর্ড জমা দিতে হবে। যাদের সাম্প্রতিক পরচা নেই, তাদের পুরনো পর্চার সঙ্গে কম্পিউটার আইডি নম্বর সম্বলিত নথির প্রতিলিপি অবশ্যই দিতে হবে। যেহেতু ক্ষতিপূরণের টাকা সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা হবে, তাই ব্যাঙ্কের পাশবইয়ের জেরক্স স্পষ্ট থাকা জরুরি।
শুক্রবারের বৈঠক জানানো হয়েছে, এক ব্যক্তির একাধিক ব্লকে জমি থাকলে তাঁকে সংশ্লিষ্ট ব্লকে আলাদা আলাদাভাবে ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করতে হবে। ক্ষতিপূরণের টাকা দ্রুত চাষিদের হাতে তুলে দিতে আবেদনপত্র জমার দু’দিনের মধ্যে সেগুলি অনলাইনে আপলোড করবে কৃষি দফতর। তারপর তা যাবে ব্যাঙ্কে। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই চাষির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ঢুকে যাবে ক্ষতিপূরণের টাকা।