দাসপুরে গৌরা-জোতঘনশ্যাম রাস্তার বর্তমান অবস্থা। ছবি: কৌশিক সাঁতরা
যেন কঙ্কালসার দশা! দু’দিকের ধার ভাঙা। পিচ উঠে গিয়েছে। পাথর বেরিয়ে গর্ত হয়ে গিয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরে এমন রাস্তার সংখ্যা কম নয়। সংস্কারের অভাবে ধুঁকছে এমন বহু গ্রামীণ রাস্তা। খন্দ রাস্তার হাল ফেরাতে আজ, বৃহস্পতিবার থেকে এক নতুন প্রকল্প শুরু হচ্ছে রাজ্যে। নাম ‘পথশ্রী’। অন্য জেলার পাশাপাশি পশ্চিম মেদিনীপুরেও বৃহস্পতিবার থেকে এই প্রকল্পের সূচনা হচ্ছে। জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘রাস্তার পুনর্নিমাণ ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্যই এই প্রকল্প।’’
প্রশাসন সূত্রে খবর, আপাতত ‘পথশ্রী’র আওতায় এসেছে জেলার ২১টি ব্লকের ৬৪৪টি রাস্তা। রাস্তা চিহ্নিত করতে সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে ওই সংখ্যক রাস্তার তালিকা তৈরি হয়েছে। এ ব্যাপারে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে প্রয়োজনীয় নির্দেশও এসেছিল। জানা যাচ্ছে, জেলা পরিষদের আওতায় থাকা আরও ২১টি রাস্তা ওই প্রকল্পের আওতায় আসতে পারে। ১- ১৫ অক্টোবরের মধ্যে ধাপে ধাপে ওই সংখ্যক রাস্তার সংস্কার কাজ শুরু হবে। কবে, কোন রাস্তার কাজের সূচনা হবে তাও ঠিক হয়েছে। আজ, বৃহস্পতিবার যেমন ৫১টি রাস্তার কাজের সূচনা হবে। এই ৫১টি রাস্তার দৈর্ঘ্য সবমিলিয়ে ১১৪.৯ কিলোমিটার।
প্রশাসনের এক সূত্র মনে করিয়ে দিচ্ছে, রাস্তা সংক্রান্ত সব প্রকল্পকে এক ছাতার তলায় এনেই ‘পথশ্রী’ অভিযান নামে নতুন এই প্রকল্প শুরু করতে চলেছে রাজ্য সরকার। রাস্তা নির্মাণ এবং রাস্তা সংস্কারের কাজে গতি আনতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের এই প্রকল্প। এ বার থেকে নতুন তৈরি হওয়া বা সংস্কার হওয়া রাস্তায় এই প্রকল্পের নামে বোর্ড বসানো হতে পারে। যেখানে প্রকল্প তৈরির খরচ সহ বিভিন্ন খুঁটিনাটির উল্লেখ থাকবে। দিন কয়েক আগেই প্রকল্প নিয়ে জেলাগুলির সঙ্গে এক ভিডিয়ো বৈঠক হয়েছে রাজ্যের। বৈঠকে সড়ক যোজনার হাল- হকিকত নিয়েও আলোচনা হয়েছে। ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের ক্যাচলাইন, ‘পথ নির্মাণই প্রগতির অভিযান’। পশ্চিম মেদিনীপুরে যে শুধু ওই সংখ্যক রাস্তারই সংস্কার প্রয়োজন তা নয়। জানা যাচ্ছে, কমবেশি ৮০০টি গ্রামীণ রাস্তা সংস্কারের প্রয়োজন রয়েছে। পরে পরে বাকি রাস্তাগুলি এই প্রকল্পের আওতায় আসবে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, আজ, বৃহস্পতিবার জলপাইগুড়ির ফুলবাড়ি থেকে ‘পথশ্রী’ প্রকল্পের সূচনা করার কথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। একই সঙ্গে জেলায় এই প্রকল্পের সূচনা হবে। প্রকল্পের সূচনায় নিজ নিজ এলাকায় থাকবেন বিধায়কেরা। বছর ঘুরলে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, গ্রামীণ ভোটব্যাঙ্ক রাজ্যের শাসক দলের অনুকূলে রাখতেই তড়িঘড়ি এই প্রকল্পের পরিকল্পনা।