এমন ফ্লেক্সেই প্রচার। —নিজস্ব চিত্র।
এলাকায় তিনি ‘আম আদমি পার্টি’র (আপ) নেতা হিসেবেই পরিচিত। পঞ্চায়েতে অবশ্য লড়ছেন নির্দলে। আপের প্রতীক ঝাড়ু ছেড়ে পেয়েছেন গোলাপ। তবে তাঁর প্রচারে শুধুই আপ প্রধান তথা দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের কথা। বলছেন, ‘‘কেজরিওয়ালের কাজের রাজনীতিতে গভীরভাবে উদ্বুদ্ধ আমি। পঞ্চায়েতকে দুর্নীতিমুক্ত করতে চাই।’’
তিনি কুতুবুদ্দিন খান। গড়বেতার ধাদিকা পঞ্চায়েত সমিতির আসনে নির্দল প্রার্থী। এই আসনে লড়াইয়ে আছে তৃণমূল, বিজেপি, সিপিএম এবং কংগ্রেস। পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়ার প্রস্তুতি গত বছর থেকেই শুরু করেছিল আপ। পথসভা, সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলেছে ‘বাংলা নির্মাণ অভিযানে’র ব্যানারকে সামনে রেখে। পশ্চিমবঙ্গেও খাতা খোলায় নজর দিয়েছিল খড়্গপুর আইআইটি-র প্রাক্তনী কেজরিওয়ালের দল। নজরে ছিল পশ্চিম মেদিনীপুর। লিফলেট বিলি হয়েছিল দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর ছবি-সহ। লেখা ছিল, ‘রাজনীতি বদলান, দেশ এমনিতেই বদলে যাবে।’ বিধানসভা কেন্দ্রওয়াড়ি ইনচার্জ নিযুক্ত হয়েছিল। গড়বেতার দায়িত্ব পেয়েছিলেন কুতুবুদ্দিন।
পঞ্চায়েতে অবশ্য লড়ছে না আপ। লোকসভা ভোটে বিরোধী জোট গঠনের প্রস্তুতিতে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলতে চান কেজরিওয়াল। আপের জেলা নেতা অলোককুমার রায় মানছেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোটে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি না। এই সিদ্ধান্ত দলের শীর্ষ নেতৃত্বের।’’ দলের অন্য এক নেতা মনে করাচ্ছেন, ‘‘আমাদের আসল লড়াই বিজেপির বিরুদ্ধে।’’
দল ভোটে না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কুতুবুউদ্দিন তাই নির্দল।তবু তাঁর ফ্লেক্সে আপ-ঘরানার কথা, ‘অসাধু নেতাদের থেকে ক্ষমতা কেড়ে আপনার ঘরের ছেলে কুতুবুদ্দিন খানকে ভোট দিন।’ গ্রামবাসীকে শোনাচ্ছেন, ‘‘পঞ্চায়েত ভোটে লড়ছি, পঞ্চায়েতস্তরে জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে। কেজরিওয়ালের দেখানো পথে সরকারি শিক্ষা ব্যবস্থাকে সাধ্যমতো ঢেলে সাজাব। পানীয় জলের অধিকার মানুষের মৌলিক অধিকার। ভেঙে পড়া প্রাচীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পুনরুদ্ধার করে সকলকে বিনামূল্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করব। পঞ্চায়েতস্তর থেকে যদি প্রশাসনে দুর্নীতি নির্মূল করা যায়, তার প্রভাব দেশের প্রশাসন যন্ত্রের সর্বোচ্চস্তর পর্যন্ত পৌঁছে যেতে বাধ্য।’’ কিন্তু দলের সিদ্ধান্ত অমান্য করে প্রার্থী কেন? কুতুবুদ্দিনের জবাব, ‘‘মানুষ চেয়েছেন বলেই পঞ্চায়েত ভোটে লড়ছি!’’ আপ নেতা অলোকের ব্যাখ্যা, ‘‘দল কোথাও লড়ছে না। কে, কোথায় নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছেন, জানা নেই।’’
কিন্তু নির্দল প্রার্থী তো তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোটে ভাগ বসাতে পারেন? তৃণমূলের মেদিনীপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা প্রত্যয়ী, ‘‘মানুষ তৃণমূলের সঙ্গে রয়েছেন।’’