জঙ্গলমহলে ভোট মিটতেই পুলিশের উপর হামলার অভিযোগে গ্রেফতার হলেন বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সম্পাদক সুখেন্দু পাত্র-সহ ৬ জন। ধৃতদের মধ্যে এক মহিলা কর্মীও আছেন। বিজেপি-র অবশ্য দাবি, মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে দলের নেতা-কর্মীদের। আক্রোশেই পুলিশকে দিয়ে এ কাজ করিয়েছে তৃণমূল।
পুলিশের দাবি, সোমবার সন্ধ্যায় ভোট শেষে নয়াগ্রাম ব্লকের মলম অঞ্চলের তেঁতুলডাঙা গ্রামে বিজেপি-তৃণমূল সমর্থকদের মারপিট হয়। দু’পক্ষের কয়েকজন জখমও হন। দু’পক্ষই অভিযোগ দায়ের করে। মঙ্গলবার সকালে ফের গোলমাল বাধে। তৃণমূল সমর্থক চন্দনা পাইক মারের চোটে সংজ্ঞা হারান বলে অভিযোগ। পুলিশ এসে তাঁকে খড়িকামাথানি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করায়। এরপর বিজেপি কর্মীদের ধরপাকড় শুরু হলেই বাধে গোলমাল। অভিযোগ, স্থানীয় বাসিন্দা তথা বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা নেতা সুখেন্দুবাবুর নেতৃত্বে জনা ২০ দলীয় কর্মী পুলিশের গাড়ি আটকে দেন। দু’জন পুলিশ কর্মীকে মারধরও করা হয়। ইট মেরে ভেঙে দেওয়া হয় পুলিশের গাড়ির কাঁচ। শেষ পর্যন্ত লাঠিপেটা করে বিজেপি কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ। এরপরই পুলিশের উপর হামলা চালানোর অভিযোগে সুখেন্দুবাবু-সহ ৬ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁদের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি ও মারধরের পৃথক একটি মামলাও হয়েছে তৃণমূলের তরফে। ঝাড়গ্রাম পুলিশ জেলার সুপার সুখেন্দু হীরা বলেন, “ধৃতদের আজ, বুধবার ঝাড়গ্রাম আদালতে তোলা হবে।”
গোটা ঘটনায় শাসকের যড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছে বিজেপি। সুখময়বাবু বলেন, “প্রচারে এসে মুখ্যমন্ত্রী ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে বুঝে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন। প্রথম দফার ভোট মিটতেই উনি ইঞ্চিতে বোঝা শুরু করেছেন। এরপর আমরাও বুঝে নেব।” এই বিজেপি নেতার পাল্টা অভিযোগ, সোমবার সন্ধ্যায় প্রথমে তৃণমূলের লোকেরাই হামলা চালায়। মঙ্গলবার সকালেও তেঁতুলডাঙা গ্রামের বাগদি পাড়ায় মদ্যপ তৃণমূল সমর্থকরা চড়াও হয়েছিল বিজেপি সমর্থকদের বাড়িতে। ওই দলে চন্দনা পাইকও ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রের অবশ্য খবর, কয়েকজন বিজেপি সমর্থককে টাকার টোপ দিয়ে তৃণমূল ভোট কিনেছে অভিযোগে সোমবার সন্ধ্যা থেকে এলাকায় গোলমাল শুরু হয়। তৃণমূলের নয়াগ্রাম ব্লক সভাপতি উজ্জ্বল দত্ত বলেন, “তেঁতুলডাঙায় আমাদের সমর্থকদেরই প্রলোভন দেখিয়ে ভোট ভাঙাতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু প্রলোভনে কাজ না হওয়ায় ওরা আমাদের সমর্থকদের উপর চড়াও হয়। ঘটনাস্থলে আসা পুলিশকেও ওরা রেয়াত করেনি।”