ফাইল চিত্র।
ওড়িশা থেকে প্রায় ৬২ কিলোগ্রাম গাঁজা বর্ধমানে পাচার করা হচ্ছে বলে আগেই খবর ছিল পুলিশের কাছে। আর তাই পালানোর পথ পেল না পাচারকারীরা। চণ্ডীপুরের কাছে নরঘাট থেকে তিনজনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তাদের কাছে উদ্ধার হয়েছে ওই পরিমাণ গাঁজা।
বুধবার সন্ধ্যায় নরঘাট বাসস্ট্যান্ডে ওড়িশা থেকে আসা একটি দূরপাল্লার বাস থেকে ওই গাঁজা নিয়ে বর্ধমান-গামী একটি বাসে ওঠার সময় চণ্ডীপুর থানার পুলিশ বমাল ধরে এক মহিলা-সহ তিনজনকে। তাদের কাছে কয়েকটি ব্যাগে ভর্তি ছিল গাঁজা। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে ওড়িশা থেকে আনা ওই গাঁজা এ রাজ্যের বর্ধমানে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ধৃতদের তিন জনের মধ্যে এক মহিলা ও তাঁর স্বামী রয়েছে। সকলের বাড়ি বর্ধমান স্টেশনের কাছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, ওড়িশা থেকে পূর্ব মেদিনীপুরের চণ্ডীপুর থানার নরঘাট রুটে দূরপাল্লার একাধিক বেসরকারি বাস চলাচল করে। বর্ধমানের বাসিন্দা ওই তিনজন কয়েকটি ব্যাগে প্রায় ৬২ কিলোগ্রাম গাঁজা নিয়ে ওড়িশা থেকে নরঘাটগামী বাসে যাত্রী সেজে উঠেছিল। দিঘা-নন্দকুমার ১১৬-বি জাতীয় সড়ক ধরে নরঘাটে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছেছিল। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে চণ্ডীপুর থানার পুলিশ বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ নরঘাট বাসস্ট্যান্ডের কাছে অপেক্ষা করছিল। ওড়িশা থেকে আসা ওই বাস দাঁড়াতেই গাঁজা ভর্তি কয়েকটি ব্যাগ সহ নেমে বাস বদল করে বর্ধমানগামী একটি বাসে ওঠার চেষ্টা করছিল ধৃতেরা। সেই সময় তাদের হাতেনাতে ধরে পুলিশ।
পুলিশ জানিয়েছে, ওড়িশা থেকে বর্ধমান যাওয়ার সরাসরি বাস না থাকায় গাঁজা পাচারকারীরা ওড়িশা থেকে নরঘাট বাসস্ট্যান্ড পৌঁছে বাস বদল করে বর্ধমান-গামী বাসে ওঠার জন্য যাচ্ছিল। ধৃতরা ওড়িশা থেকে গাঁজা পাচারের সাথে জড়িত বলে প্রাথমিক জেরায় জানা গিয়েছে। ধৃত তিনজনকে বৃহস্পতিবার তমলুক আদালতে তোলে পুলিশ। বিচারক তিনজনকেই ৮ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে এগরা থেকে গাঁজা-সব এক যুবককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। গত কয়েক মাসে গাঁজা -সহ পর পর ধরপাকড়ে পুলিসের কাছে এটা পরিষ্কার হয়েছে যে ওড়িশা থেকে এ রাজ্যে গাঁজা পাচারের সহজ পথ হিসাবে পূর্ব মেদিনীপুরকে বেছে নিয়েছে পাচারকারীরা। কারণ এই জেলার সঙ্গে ওড়িশার বেশ কয়েক জায়গায় সীমানা রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম প্রধান সামীনা দিঘা। পুলিশের মতে যেহেতু দিঘা থেকে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বাস রুট রয়েছে। তাই সেই সুযোগকেই হাতিয়ার করতে চাইছে পাচারকারীরা।
জেলা পুলিশের এক পদস্থ আধিকারিক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘এখন এই জেলার বহু বাসিন্দা ওড়িশার কটক ও ভুবনেশ্বরে চিকিৎসার জন্য বাসে যাতায়াত করেন। সেজন্য জেলার নরঘাট, দেউলিয়া-সহ বিভিন্ন জায়গা থেকে দূরপাল্লার রুটে বেসরকারি বাসে চেপে ওড়িশা যান। রোগী সহ তাঁদের পরিজনদের কাছে ব্যাগ ভর্তি জিনিসপত্র থাকে। দিঘা সীমানায় বাসে নিয়মিত চেকিং চলে। তাই গাঁজা পাচারকারীরা ওই সড়ক পথ এড়িয়ে অন্য পথে এরাজ্যে ঢোকার চেষ্টা করছে। এক্ষেত্রে ধৃত গাঁজা পাচারকারীরা কোন পথে ওড়িশা থেকে এ রাজ্যে ঢুকেছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।