আইসি-কে মারধরে ধৃত তিন

পড়ুয়া মৃত্যুতে টনক, গতিতে রাশের প্রস্তাব

পথ দুর্ঘটনায় দুই স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুতে ঘুম ভাঙল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের। শালবনির ভাদুতলায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের যে এলাকায় বৃহস্পতিবার অটো-লরির সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছিল দুই ছাত্রছাত্রীর, সেখানে গাড়ির গতি ঘন্টায় ৫০ কিলোমিটার রাখতে চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৭ ০২:৩৩
Share:

বিপজ্জনক: ভাদুতলায় তিন রাস্তার সংযোগস্থলে ট্রাফিক পুলিশের দেখা নেই। গতি বাড়িয়ে চলেছে বাস-লরি। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

পথ দুর্ঘটনায় দুই স্কুল পড়ুয়ার মৃত্যুতে ঘুম ভাঙল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশের। শালবনির ভাদুতলায় ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের যে এলাকায় বৃহস্পতিবার অটো-লরির সংঘর্ষে প্রাণ গিয়েছিল দুই ছাত্রছাত্রীর, সেখানে গাড়ির গতি ঘন্টায় ৫০ কিলোমিটার রাখতে চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর তোড়জোড় শুরু হল। জেলার পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “ভাদুতলার উপর দিয়ে জাতীয় সড়ক গিয়েছে। তাও সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠাচ্ছি যাতে ওখানে গাড়ির গতি ৫০ কিলোমিটার রাখা যায়।”

Advertisement

তুষ বোঝাই লরি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অটোয় ধাক্কা মারায় বৃহস্পতিবার সকালে দুর্ঘটনা ঘটে ভাদুতলা চেক পোস্টের কাছে। অটোয় থাকা ভাদুতলা হাইস্কুলের বারোজন পড়ুয়ার মধ্যে দু’জনের মৃত্যু হয়। জখম হয় বাকিরা। তারা এখনও মেদিনীপুর মেডিক্যাল ও কলকাতার হাসপাতালে ভর্তি। বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনার পরে জনরোষের মুখে পড়েছিলন শালবনি থানার আইসি বিশ্বজিৎ সাহা। রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়েছিল তাঁকে। সেই ঘটনায় স্থানীয় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার ধৃতদের মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করা হলে তিনজনেরই সাতদিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ হয়েছে।

পুলিশ আধিকারিককে মারধরে জড়িতদের খোঁজে ওই দিন রাতে ভাদুতলা, কুতুড়িয়া, ডাঙরপাড়া, বাড়ুয়া প্রভৃতি এলাকায় তল্লাশি চলে। প্রহৃত বিশ্বজিৎবাবু মেদিনীপুরের এক নার্সিং হোমে চিকিৎসাধীন। মারধরের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে বলেও পুলিশের এক সূত্রে খবর। জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “দুর্ঘটনার পরে জখমদের উদ্ধার করতে আইসি গিয়েছিলেন। তাঁকে মারধর করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে পুলিশ কঠিন থেকে কঠিনতর ব্যবস্থা নেবে। যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কাউকে ছাড়া হবে না।”

Advertisement

‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ নিয়ে প্রচারের অন্ত নেই। তাও জাতীয় সড়কে বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চলাচল ঠেকানো যাচ্ছে না। বেশিরভাগ গাড়িই ১২০-১৪০ কিলোমিটার গতিতে চলাচল করছে। ভাদুতলার দুর্ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, ঘাতক লরিটির গতিও ১০০ কিলোমিটারের কাছাকাছি ছিল। দুর্ঘটনা এড়াতে তাই শুধু শালবনির ভাদুতলা নয়, গড়বেতা ও বেলদায় ঢোকার মুখেও গাড়ির গতি ৫০ কিলোমিটারে বেঁধে দিতে চাইছে জেলা পুলিশ। শালবনির ভাদুতলার উপর দিয়ে যেমন ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক গিয়েছে, তেমন বেলদায় রয়েছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং গড়বেতার উপর দিয়ে গিয়েছে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। জেলা পুলিশ মনে করছে, এই সব জনবহুল এলাকায় গাড়ির গতি কমানো গেলে দুর্ঘটনার সংখ্যা কমবে।

শুধু গাড়ি গতি নিয়ন্ত্রণ নয়, দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকাগুলোয় নজরদারি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনাও করছে পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার ভারতীদেবীর আশ্বাস, “পথ দুর্ঘটনা কমানোর সব রকম চেষ্টা চলছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement