প্রতীকী ছবি।
আমপানের ক্ষতিপূরণের তালিকায় আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে তৃণমূলের ২৫ জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। আর এই খবর পাওয়া পরই জেলার অন্যত্রও নন্দীগ্রামের মতোই আমপানে দলের অভিযুক্ত নেতা-কর্মীদের ক্ষেত্রেও কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না সেই প্রশ্ন উঠেছে।
নন্দীগ্রামের মতো পদক্ষেপ জেলার অন্যত্র নেওয়ার প্রশ্নে জেলা তৃণমূল সভাপতি শিশির অধিকারী বলেন, ‘‘প্রত্যেক ব্লক সভাপতিকে ক্ষতিপূরণের তালিকায় অনিয়ম সংক্রান্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে দলের তরফে ব্যবস্থা নেওয়া তো হবেই। সেই সঙ্গে আইনানুগ ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।’’ তা হলে কী শুভেন্দু অধিকারীর বিধানসভা ক্ষেত্র নন্দীগ্রাম থেকেই দল শুদ্ধিকরণের পথে হাঁটছে? এ প্রশ্নের উত্তরে শিশির বলেন, ‘‘এটা বলতে পারেন। জেলার অন্য ব্লক গুলিতেও ভিতরে ভতিরে এই প্রক্রিয়া চলছে।’’
নন্দীগ্রামের হাত ধরে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। এখানে তৃণমূলের এমন কড়া পদক্ষেপ দেখে হলদিয়া, তমলুক থেকে কাঁথি সর্বত্র প্রশ্ন তুলেছেন আমপানের ক্ষতিপূরণ না পাওয়া ক্ষতিগ্রস্তরা। তাঁদের দাবি, নন্দীগ্রামে যদি দুর্নীতি নিয়ে দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে এমন পদক্ষেপ করতে পারে তৃণমূল। তা হল এই সব এলাকাতেও একই পদক্ষেপ করতে হবে। হলদিয়া পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে খোদ ওয়ার্ড সভাপতি রবীন্দ্রনাথ আদক তিনতলা পাকা বাড়ি থাকতেও নিজের নামে ক্ষতিপূরণের টাকা তুলেছিলেন। শেষ পর্যন্ত এলাকাবাসীর চাপে তিনি টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হন। অথচ তাঁর বিরুদ্ধে দলের তরফে এখনও ব্যবস্থা নেওয়া হলা না সেই প্রশ্ন তুলেছেন বাসিন্দারা। এ বিষয়ে হলদিয়া টাউন ব্লক সভানেত্রী মধুরিমা মণ্ডলের সাফাই, ‘‘এ নিয়ে অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লক তৃণমূলের আহ্বায়ক শরৎ মেট্যা বলেন, ‘‘দলের যাঁরা পাকা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও ক্ষতিপূরণের টাকা নিয়েছেন। জেলা নেতৃত্বের নির্দেশে তাঁদের টাকা ফেরত দিতে বলা হয়েছে।’’ কাঁথির রামনগর-২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি অরুণ দাস বলেন, ‘‘আমপানের ক্ষতিপূরণের টাকা নেওয়ায় দলের কেউ জড়িত নয়। তাই দলের কোনও নেতার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না।’’ তবে কাঁথি-৩ ব্লকের সভাপতি নন্দ মাইতির দাবি, ‘‘অভিযুক্ত শাসক দলের নেতা ও জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
যদিও বিজেপির জেলা সভাপতি (তমলুক) নবারুণ নায়েক বলেন, ‘‘তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রতিনিধি ও নেতারা যে টাকা বেআইনিভাবে নিয়েছিলেন তা সরকারি অর্থ। তাই সরকারি অর্থ তছরূপের দায়ে এদের সকলের বিরুদ্ধে মামলা করা দরকার ছিল। তা না করে তৃণমূল দলীয় ভাবে টাকা ফেরত, সাসপেন্ড করার নামে অপরাধীদের আড়াল করছে। এ সব কাজ লোক দেখানো ছাড়া কিছু নয়। মানুষ এর জবাব দেবেন।’’