নার্সিংহোমে চাঁদহরি। নিজস্ব চিত্র
অফিসে ঢুকে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্যের তথা নিহত তৃণমূল নেতা নান্টু প্রধানের বাবা চাঁদহরি প্রধানের মাথা ফাটানোর ঘটনা ঘটেছে মহম্মদপুর-১ পঞ্চায়েতে। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। সেই অভিযোগে কোনও রাজনৈতিক দলকে কাঠগড়ায় তোলা হয়নি ঠিকই। কিন্তু যে ১৬ জনের নাম রয়েছে ওই অভিযোগপত্রে, তাদের মধ্যে বিজেপির কর্মীদের পাশাপাশি রয়েছে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের নামও। এমনকী, যে দুই ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তারাও এলাকায় তৃণমূল সমর্থক হিসাবে পরিচিত। ফলে ঘটনায় তৃণমূলের একটি গোষ্ঠী কোন্দলের তত্ত্ব উঠে আসছে।
বৃহস্পতিবার বিকাল ৪টায় মহম্মদপুর-১ পঞ্চায়েতে এলাকার সাবমার্সিবল পাম্পের টেন্ডার ফর্ম তোলা এবং সেই বিষয়ে ঠিকাদারদের নিয়ে এক আলোচনা সভা হওয়ার কথা ছিল। সেই মত গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ঠিকাদাররা সেখানে যান। স্থানীয় তৃণমূল কর্মী এবং ঠিকাদারদের একাংশের অভিযোগ, চাঁদহরি অনুগামী ঠিকাদারদের ওই কাজ পাইয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। এর পরেই কয়েকজন দুষ্কৃতী রড, অস্ত্র, বোমা নিয়ে অঞ্চল অফিসে ঢুকে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। চাঁদহরির মাথা ফাটানোর পাশাপাশি অন্য পঞ্চায়েত সদস্যদেরও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।
ভগবানপুর থানায় বাম পঞ্চায়েত সদস্য-সহ তৃণমূল, বিজেপি সমর্থকদের নাম উল্লেখ করে অভিযোগ দায়ের হয়। এর পরেই শুক্রবার রাতে স্বপন পাল এবং গোকুল মাইতি নামে দুই ব্যক্তিকে পুলিশ গ্রেফতার করে। দু’জনেই এলাকায় তৃণমূল সমর্থক হিসাবে পরিচিত হওয়ার পাশাপাশি চাঁদহরি বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর ঠিকাদার হিসাবেও পরিচিত। গোকুল মহম্মদপুর-২ পঞ্চায়েত এলাকার ঠিকাদার। তবে গত কয়েক বছর ধরে গোকুল এবং তার বাবা রাম মাইতি মহম্মদপুর-১ গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও ঠিকাদারির কাজ করত।
ওই হামলার পরেই স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব দাবি করে, এর পিছনে বিজেপিই রয়েছে। দলীয় সমর্থকদের গ্রেফতারির পরে গোষ্ঠী কোন্দলের বিষয়টি সামনে আসায় স্বাভাবিকভাবেই অস্বস্তিতে শাসকদল। যদিও ভগবানপুর-১ ব্লকের তৃণমূলের সভাপতি মদনমোহন পাত্রের বক্তব্য, ‘‘ধৃতরা আগে তৃণমূল সমর্থক ছিল ঠিকই। কিন্তু এখন বিজেপির হয়ে দুষ্কৃতীদের সঙ্গে নিয়ে হামলা চালিয়েছে। গোষ্ঠী কোন্দলের অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।’’
চাঁদহরি তমলুকে একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন। আপাতত তাঁর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। নিজের পছন্দের গোষ্ঠীর ঠিকাদারকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে শনিবার তিনি বলেন, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে আমাদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। গোকুল মাইতি অন্য গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দা। তাই তাঁকে টেন্ডার না দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ওই দিন অবশ্য দু-পক্ষকে ডেকে আলোচনার কথা ছিল। তার আগেই বিজেপি এবং বাম আশ্রিত দুষ্কৃতীদের নিয়ে ওঁরা হামলা চালান। অভিযুক্তরা কেউই আমাদের দলের লোক নয়।’’