তৃণমূল ছাত্র নেতার খোঁজে তল্লাশি
Crime Against Women

গণধর্ষণের নালিশ, ধৃত ২

ঘটনাটি মাসখানেক আগের। গত ২০ জুলাই রাতে এক তরুণীকে মাদক খাইয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিতা রামনগর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রামনগর শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৯:৪৬
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

মহিলা চিকিৎসক ছাত্রীকে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় আন্দোলন চলছে রাজ্য জুড়ে। এই আবহে কাঁথি মহকুমায় গণধর্ষণের একটি পুরনো অভিযোগে তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের জেলা (কাঁথি) সভাপতি শতদল বেরা এবং আরও কয়েকজন টিএমসিপি নেতার নাম জড়াল। পুলিশ বুধবার রাজকুমার জানা এবং গোবিন্দ জানা নামে দুজনকে গ্রেফতারও করেছে। চলছে শতদল-সহ বাকিদের খোঁজে তল্লাশি।

Advertisement

ঘটনাটি মাসখানেক আগের। গত ২০ জুলাই রাতে এক তরুণীকে মাদক খাইয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতিতা রামনগর কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। এ বছর তিনি এক যুবককে বিয়ে করেন। তাঁরা কলেজের সামনে একটি মেসে ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতেন। নির্যাতিতা জানান, গত ৩১ জানুয়ারি বাড়ির অমতে বিয়ে করেছিলেন। কলেজের ছাত্র নেতারা সহযোগিতা করেন এতে। তাঁদের পরামর্শে কলেজের সামনে মেসে থাকতেন। গত ১৯ জুলাই মেসে একটি বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল। সে দিন তাঁকে এক ‘দাদা’ হেনস্থা করে বলে দাবি।

নির্যাতিতার অভিযোগ, পরের দিন শতদলের নেতৃত্বে কয়েকজন ‘দাদা’ রাত ১০টা নাগাদ মেসের ঘরে এসে খাওয়াদাওয়ার কথা বলে। তাঁর স্বামী প্রতিবাদ করলে দুজনকে হুমকি দেয়। পরে তাঁদেরও মদ্যপান করানো হয় বলে দাবি। নির্যাতিতা বলছেন, ‘‘রাত ১২টা নাগাদ হুঁশ ফিরলে আমাকে দেখতে পাননি স্বামী। তিনি খুঁজতে বেরিয়েছিলেন। বারান্দায় মদ্যপ দাদাদের সঙ্গে আমাকে বিবস্ত্র অবস্থায় উদ্ধার করেন। অভিযুক্তরা চলে গেলেও রাত ৩টে নাগাদ সদলবলে এসে প্রাণে মারার হুমকি দেয়।’’

Advertisement

সম্প্রতি ওই ছাত্রী এবং তাঁর স্বামীকে রামনগর কলেজের অদূরে পানিপারুল সেতুর কাছে আটকায় শতদলের অনুগামীরা। দাবি, তাঁদের মোবাইল ফোন কেড়ে দুজনের পরিবারকে খুন করার হুমকি দেওয়া হয়। এর পরে কাঁথি মহিলা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন নির্যাতিতা। তার ভিত্তিতে পুলিশ মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে রাজকুমার এবং গোবিন্দকে গ্রেফতার করেছে। রাজকুমার কান্ডগ্রাম আর গোবিন্দ পাণিপারুলের বাসিন্দা। ধৃতদের বিরুদ্ধে গণধর্ষণ-সহ মোট ছ’টি ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। এ দিন কাঁথি আদালত দু’জনকে ছ’দিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। তবে ঘটনায় কুলুপ এঁটেছেন জেলা পুলিশের আধিকারিকেরা।

ছাত্র নেতা শতদল এবং তার বাকি অনুগামীরা আপাতত গা ঢাকা দিয়েছে। এদিন শতদলের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে একাধিকবার ফোন করা হয়। তবে তার মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল। শতদল রামনগর কলেজের অস্থায়ী কর্মী। ওই কলেজের পরিচালন কমিটির মাথায় রয়েছেন যুব তৃণমূলের জেলা সভাপতি সুপ্রকাশ গিরি। শতদল রামনগরের বিধায়ক অখিল গিরির ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল। টিএমসিপি’র রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সংবাদমাধ্যম থেকেই জেনেছি। তবে যতদূর জানি শতদল ব্যক্তিগতভাবে এ ধরনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে না।’’

কেন এতদিন বাদে অভিযোগ জানালেন নির্যাতিতা, সেই প্রশ্নই উঠেছে তৃণমূলের অন্দরে। তবে ঘটনায় কাঁথির বিজেপি সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারীর কটাক্ষ, ‘‘এটা তৃণমূলের সংস্কৃতি। গোটা রাজ্য আর জি কর বানিয়ে ফেলেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজত্বে নারী নিরাপত্তা নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement