দুর্ঘটনার পরে। নিজস্ব চিত্র।
জেলাজুড়ে বেপরোয়া ভাবে ছুটছে বেসরকারি বাস। ছাদেও চলছে যাত্রী পরিবহণ। গতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনের নজরদারি নেই বললেই চলে। মাঝে মধ্যেই ঘটে দুর্ঘটনা। এবার নয়াগ্রাম থানার উপর পাতিনা গ্রামে উল্টে গেল একটি বেসরকারি বাস। শনিবারের ওই দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ১৮ জন যাত্রী। তাঁদের মধ্যে ৮ জনকে গোপীবল্লভপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন সকালে নয়াগ্ৰামের জামিরাপাল থেকে ওই বাসটি গোপীবল্লভপুরের দিকে যাচ্ছিল। উপর পাতিনা গ্রামে হাইস্কুলের কাছে সরু রাস্তায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায় সেটি। পরে আশপাশের লোকজন এবং পুলিশ এসে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। বাসযাত্রীদের অভিযোগ, সরু রাস্তায় জোরে গাড়ি চালানোর জন্যই এই দুর্ঘটনা। যাতে প্রাণহানিও হতে পারত।
বাসের গতিবেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য জেলার বিভিন্ন জায়গায় গার্ডরেল ও স্পিড ব্রেকার লাগানো হয়েছে। তবুও দ্রুত গতিতে বাস চলাচলের অভিযোগ ওঠেই। পুলিশ অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন লরির গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করলেও বাসের ক্ষেত্রে সেভাবে নজরদারি চালানো হয় না বলে অভিযোগ। অতিরিক্ত গতিতে বাস চালানো ও ছাদে যাত্রী পরিবহণের কথা স্বীকার করেছে বাস মালিকদের সংগঠনও।
ঝাড়গ্রাম জেলা বাস ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ পাল বলেন, ‘‘পরিবহন দফতর নিয়মিত নজরদারি চালায়। তবে গ্রামের দিকে অনেক যাত্রী জোর করে ছাদে উঠে যায়। ছাদ থেকে নামাতে চাইলে মারধর করতে আসে।’’ তিনি মানছেন, ‘‘কিছু রুটে দ্রুত গতিতে বাস চলাচল করে। বাস মালিকদের সাবধানে চালানোর কথা বলা হয়। বাস চালকদেরও একথা বারবার বোঝানো হয়।’’
ঝাড়গ্রাম জেলা পরিবহণ আধিকারিক বিশ্বজিৎ মজুমদার বলছেন, ‘‘নিয়ম অনুযায়ী, ফাঁকা রাস্তায় বাসগুলির গতিবেগ প্রতি ঘণ্টায় সর্বাধিক ৮০ কিলোমিটার। জনবহুল ও গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সেই গতিবেগ নিয়ন্ত্রণ করে চালাতে হবে। কিছু কিছু বাস সেই নিয়ম মানে না। আমরা বাস মালিক সংগঠনকে ডেকে এ ব্যাপারে আবার সতর্ক করব।’’ গোপীবল্লভপুরের এসডিপিও মাকওয়ানা মিতকুমার সঞ্জয় কুমার জানান, গতি নিয়ন্ত্রণে গার্ডরেল ও স্পিড ব্রেকার রাস্তায় দেওয়া হয়েছে। নজরদারি ও স্পেশাল ড্রাইভ আরও বাড়ানো হবে।