ফাইল চিত্র।
কোনওভাবেই মাত্রা কমিয়ে দেওয়া যাবে না করোনার টিকা— জেলার তরফে স্পষ্ট জানানো হল ব্লকগুলিকে। ১০ জনের জন্য নির্দিষ্ট টিকা ১২ জনকে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে। প্রশাসন সূত্রের খবর, অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) সুদীপ সরকারকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছিলেন জেলাশাসক রশ্মি কমল। অতিরিক্ত জেলাশাসক সোমবার বিষয়টি নিয়ে জেলাশাসকের সঙ্গে কথা বলেছেন। এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের এক বৈঠকও হয়েছে। জেলার তরফে ছিলেন মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভুবনচন্দ্র হাঁসদা। ব্লকের তরফে ছিলেন বিএমওএইচ-রা। সেখানেই ব্লকগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে টিকাকরণ যাতে চলে, সেই নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
জেলাশাসক রশ্মি কমল বলেন, ‘‘দাঁতনের বিষয়টি নজরে এসেছিল। জেলার তরফে পদক্ষেপ করা হয়েছে। নির্দিষ্ট মাত্রায় টিকা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছে।’’ সরকারি নির্দেশ অনুযায়ী, করোনা প্রতিষেধকের একটি ভায়াল থেকে ১০ জনকে টিকা দেওয়ার কথা। কিন্তু দাঁতন- ১ ব্লকে ১২ জনকে টিকা দেওয়া হচ্ছিল বলে অভিযোগ। ক্ষুব্ধ নার্সরা এ নিয়ে এক ‘সিনিয়র’ নার্সের বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রভাবিত এক সংগঠনে লিখিত নালিশও জানিয়েছিলেন।
স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবশ্য দাবি ছিল, অতিরিক্ত ডোজ় ব্যবহৃত হয়েছে। নিয়ম মতো একটি ভায়ালে ৫ মিলিলিটার প্রতিষেধক থাকে। প্রত্যেককে ০.৫ মিলিলিটার প্রতিষেধক দেওয়ার কথা। তবে টিকাকরণের সময় সামান্য প্রতিষেধক নষ্ট হতে পারে ধরে নিয়ে ভায়ালে কিছুটা বাড়তি ডোজ় থাকতে পারে। জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশ যদিও বলছেন, সেই বাড়তি ডোজ় থেকে ১০ জনের বদলে ১১ জনের টিকাকরণ হতে পারে। তবে কোনওভাবেই ১২ জনের নয়। সে ক্ষেত্রে, কম মাত্রায় প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছিল বলেই অনুমান।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, পশ্চিম মেদিনীপুরে কোভিশিল্ড টিকা নষ্টের হার -৬ থেকে -৭ শতাংশ। অর্থাৎ, টিকা নষ্ট তো হয়ইনি। উপরন্তু ১০টি ভায়ালে ১০০ জনের প্রতিষেধকে গড়ে ১০৬ থেকে ১০৭ জনের টিকাকরণ সম্ভব হয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক বলছেন, ‘‘কোভিশিল্ডের ক্ষেত্রে ‘জিরো ওয়েস্টেজ’-এর তালিকায় পশ্চিম মেদিনীপুরও রয়েছে। তবে ১০০ জনের বরাদ্দ টিকা ১২০ জনকে দেওয়া অসম্ভব। তা হলে গ্রহীতারা নির্দিষ্ট পরিমাণের কম মাত্রায় টিকা পাবেন। তাতে প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমবে।’’