প্রতীকী ছবি।
প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের তিন সচিব এবং রাজ্যের অর্থসচিবের বক্তব্য আগেই জানতে চেয়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। মেট্রো ডেয়ারির তদন্তে এ বার তারা রাজ্য দুগ্ধ ফেডারেশনের চেয়ারম্যান পরশ দত্ত এবং অন্য তিন কর্তাকে তলব করল। তাঁদের মধ্যে এক জন সিনিয়র আইএএস অফিসার। আজ, বুধবার থেকে সাত দিনের মধ্যে তাঁদের বক্তব্য নথিভুক্ত করা হবে।
ইডি সূত্রের খবর, এর আগে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের তিন সচিব, অর্থসচিব জানিয়েছিলেন, প্রথা এবং নিয়মকানুন মেনেই মেট্রো বিক্রির সব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তদন্তকারীদের দাবি, মেট্রো বিক্রির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছিল চার বছর আগে, বারাসতের যাত্রা উৎসবের মঞ্চে। কে সেই মঞ্চে দুগ্ধ ফেডারেশনের প্রধান পরশবাবুকে দ্রুত মেট্রো বিক্রির প্রক্রিয়া শেষ করতে বলেছিলেন, তা জানতে চায় ইডি। ১৭ মার্চ পরশবাবুকে ডেকে পাঠিয়েছেন তদন্তকারীরা। এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে পরশবাবুকে বার বার ফোন করা হয়েছিল। কিন্তু তিনি ধরেননি, কোনও জবাবও দেননি।
দুগ্ধ ফেডারেশনের অন্য দুই কর্তা তাপস কর এবং দেবব্রত চক্রবর্তীকে যথাক্রমে ১২ এবং ১৫ ফেব্রুয়ারি ডেকেছে ইডি। বুধবার ডাকা হয়েছে এক সিনিয়র আইএএস অফিসারকে। প্রাণিসম্পদ দফতরে থাকাকালীন তিনি ইডি-র প্রশ্নাবলির জবাব দেওয়ার দায় নিতে রাজি হননি। ইডি সূত্রের খবর, তিনি এই সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাব দেওয়ার জন্য অর্থসচিবের কাছে ফাইল পাঠিয়েছিলেন। অভিযোগ ওঠে, অর্থসচিব সেই দায়িত্ব নিতে রাজি হননি। এই নিয়ে টালবাহানার মধ্যে ওই সিনিয়র আইএএস-কে কম গুরুত্বের পদে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে নবান্নের খবর। ইডি এখন এই ব্যাপারে তাঁর সহযোগিতা চাইছে।
তদন্তকারীদের দাবি, সরকারি কর্তারা নিয়ম মেনে সব কাজ হয়েছিল বলে জানালেও মেট্রো ডেয়ারি বিক্রি করে দেওয়ার জন্য কোনও এক মহলের চাপ ছিল। তদন্তে ইডি জেনেছে, দুগ্ধ ফেডারেশনের যে-বৈঠকে মেট্রো বিক্রি সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, এক আইএএস অফিসার সেই বৈঠক ছেড়ে বেরিয়ে গিয়েছিলেন। তদন্তকারীরা সেই বৈঠক সংক্রান্ত ফাইলটি বার বার চেয়েও পাচ্ছেন না। মেট্রো বিক্রি সংক্রান্ত ফাইলে সই করেছিলেন অর্থমন্ত্রী। রাজ্য মন্ত্রিসভাতেও সেটি পেশ করা হয়েছিল। দফতরের সচিবদের বক্তব্য, মন্ত্রিসভা কোনও সিদ্ধান্ত অনুমোদন করলে তাঁরা তা মেনে চলতে বাধ্য। এই বিষয়ে ইডির তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, মন্ত্রিসভাকে ঠিক পরামর্শ দেওয়া এবং রাজকোষের ক্ষতি হচ্ছে কি না, তা জানানোর দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট আমলাদের। এ ক্ষেত্রে আমলারা সেই কাজ যথাযথ ভাবে করেছেন কি না, তা দেখার জন্যই বার বার তাঁদের ডাকতে হচ্ছে।