Jhargram

Mental Health: স্মৃতি ফিরেছে, রাজিয়া ফিরতে চান বাংলাদেশ

হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল শয্যায় বসে গালে হাত দিয়ে কেবল বিড়বিড় করছেন রাজিয়া।

Advertisement

কিংশুক গুপ্ত

ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১০ ডিসেম্বর ২০২১ ১৫:২৬
Share:

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ভবঘুরে। —নিজস্ব চিত্র।

বাড়ি ফিরতে চান ‘বিদেশিনী’ রাজিয়া বেগম। বছর চল্লিশের ওই মহিলা আচমকা স্মৃতি ফিরে পেয়েছেন। দাবি করেছেন, তাঁর বাড়ি বাংলাদেশের বরিশালে। প্রায় দু’মাস ঝাড়গ্রাম জেলা সুপার স্পেশালিটির ফিমেল মেডিক্যাল ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই মহিলা।

Advertisement

হাসপাতালের খাতায় এখনও ওই মহিলার নাম-পরিচয় অজ্ঞাত! কীভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে ঢুকেছিলেন স্পষ্ট করে এখন মনে করতে পারছেন না তিনি। রাজিয়াকে তাঁর নিজের দেশে ফেরাতে উপযুক্ত পদক্ষেপ করার জন্য জেলা পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক। হাসপাতাল সূত্রের খবর, রাজিয়া মানসিকভাবে সুস্থ নন। শারীরিক ভাবেও বেশ দুর্বল। স্মৃতি হাতড়ে রাজিয়া চিকিৎসকদের জানিয়েছেন, বাংলাদেশের বরিশাল বিভাগের পটুয়াখালি জেলায় তাঁর বাড়ি। তাঁর বাড়ির অদূরে সমুদ্র ও নদীর মোহনার কথাও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু নির্দিষ্ট করে ঠিকানা জানাতে পারছেন না ওই বিদেশিনী। হাসপাতাল সুপার ইন্দ্রনীল সরকার বলছেন, ‘‘ওই মহিলা কিছুটা সুস্থ হওয়ার পরে নিজেকে বাংলাদেশি হিসেবে পরিচয় দিয়েছেন। কখনও স্মৃতি হাতড়ে তাঁর ভাই হারুনের নাম বলছেন। কখনও বলছেন, সতেরো বছরের ছেলে রাহাতের কথাও। মহিলার চিকিৎসা চলছে। আগের তুলনায় ভাল আছেন। ওই মহিলার বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’ হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার গৌরব ভট্টাচার্য জানাচ্ছেন, রাজিয়ার দাবি, তিনি স্বামী পরিত্যক্তা। তবে স্বামীর নাম বলছেন না তিনি। নিজের এলাকার তিনটি গ্রামের নামও জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু নিজের গ্রামের নাম মনে নেই বলেই দাবি করছেন ওই মহিলা।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেল শয্যায় বসে গালে হাত দিয়ে কেবল বিড়বিড় করছেন রাজিয়া। বাড়ি কোথায় প্রশ্ন করতে জবাব দেন, ‘‘বরিশালের পটুয়াখালি জেলায়।’’ গ্রামের নাম? জবাব না দিয়ে বলেন, ‘‘বাড়ি যাব আমি? ব্যবস্থা করে দেন!’’ কীভাবে ভারতে এসেছিলেন? রাজিয়া মনে করতে পারলেন না। তবে ওয়ার্ডের নার্সরা জানালেন, একবার রাজিয়া বলেছিলেন, সুন্দরবন এলাকা দিয়ে তিনি এসেছিলেন। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভবঘুরে ওই মহিলাকে কয়েকমাস আগে পাওয়া গিয়েছিল ঝাড়গ্রামের রাস্তায়। পুরসভার ভবঘুরে কেন্দ্রে তাঁকে প্রথমে রাখা হয়েছিল। ২৩ সেপ্টেম্বর তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তবে প্রথমে নাম পরিচয় অজ্ঞাত হিসেবেই হাসপাতালে ভর্তি হন রাজিয়া। পরে কিছুটা সুস্থ হয়ে নিজের ছেঁড়া-ছেঁড়া পরিচয় জানান চিকিৎসক ও নার্সদের। হাসপাতালের তরফে পুরো বিষয়টি জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়। একজন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটকে রাজিয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেন জেলাশাসক। ঝাড়গ্রামের জেলাশাসক জয়সি দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘ভবঘুরে ওই মহিলার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য জেলা পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছি।’’ জেলা পুলিশ সুপার বিশ্বজিৎ ঘোষ বলছেন, ‘‘জেলাশাসকের চিঠির ভিত্তিতে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement