মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশকে কার্যত উপেক্ষা করে উল্টো স্রোত! কালীঘাটের বাড়িতে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, জেলায় ২৬ জন বর্তমান বিধায়ককেই টিকিট দেওয়া হবে। সেই নির্দেশের মাধ্যমেই পরোক্ষে ঘোষণা হয়েছিল, সাতগাছিয়া কেন্দ্রে সোনালি গুহ ফের প্রার্থী হচ্ছেন। বৈঠকেই মৃদু স্বরে ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছিলেন জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধক্ষ্য তরুণ রায়। তাতে মুখ্যমন্ত্রীর ধমকও জুটেছিল! কিন্তু এলাকায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া তাতে থামছে না!
মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণার পর থেকেই সাতগাছিয়া কেন্দ্রে তৃণমূল কর্মীদের বড় অংশ ক্ষুব্ধ। ডেপুটি স্পিকারকে ফের প্রার্থী হিসাবে মানতে না চেয়ে এলাকায় পোস্টারও পড়েছে। এ বার আমতলা সিংহি মোড়ে একটি প্রেক্ষাগৃহে বিক্ষোভ সমাবেশ করে সাতগাছিয়া বিধানসভা এলাকার ১১টি পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান। হাজির ছিলেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি। সোনালির মনোনয়নের বিরুদ্ধে ওই সভায় বক্তৃতা করেন জেলা পরিষদের সভাধিপতি শামিমা শেখের স্বামী রমজান আলিও।
ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা-কর্মীদের বক্তব্য, গত পাঁচ বছর বিধানসভা এলাকায় বিধায়ক যাওয়া-আসা করেননি। এমনকী, বিধানসভা এলাকায় বিধায়কের কোনও কার্যালয় অবধি নেই। বিধায়ককে ফোন করলে অধিকাংশ সময়েই বলা হয়, ‘দিদি অসুস্থ’! সোনালি প্রার্থী হলে নির্বাচনের কাজ থেকে অব্যাহতি নেবেন বলেও এ দিনের সভায় নেতা-কর্মীরা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তাঁরা এক সুরে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানাচ্ছি, স্থানীয় কাউকে প্রার্থী করা হোক। আপনি উন্নয়নের চেষ্টা করছেন। কিন্তু বিধায়ক নানা অজুহাতে বিধানসভা এলাকায় যাতায়াত বন্ধ রেখেছেন।’’ তরুণবাবুর বক্তব্য, ‘‘সোনালির বিরুদ্ধে তৃণমূল কর্মীদের জোট হয়ে গিয়েছে!’’ সভাস্থলে দাঁড়িয়ে ন’হাজারি এলাকার উপ-প্রধান বাবলু বেগ বলেন, ‘‘আমার কাকিমা হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। একটা সার্টিফিকেটের জন্য প্রায় ৭ দিন বিধায়কের বাড়িতে গিয়ে দেখা পাইনি। তা হলে সাধারণ মানুষের কী হাল হয়েছে?’’
ডেপুটি স্পিকার অবশ্য এই ক্ষোভ গায়ে না মেখে বলছেন, ‘‘আমি দলের অনুগত সৈনিক। মুখ্যমন্ত্রী আমাকে সাতগাছিয়ায় মনোনীত করেছেন। আমি জনসংযোগের কাজ শুরু করে দিয়েছি। ক্ষোভের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীই দেখবেন।’’ সাতগাছিয়ায় ক্ষোভের বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে দাবি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার তৃণমূল সভাপতি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের। তিনি বলেন, ‘‘আমি কলকাতার বাইরে। ওই বিষয়ে আমার কাছে কোনও খবর নেই।’’