প্রতীকী ছবি।
কম সংখ্যায় লোকাল ট্রেন চললে, ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যাবে কি না, তা নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত রাজ্য এবং রেলকর্তারা। প্রাথমিক ভাবে অর্ধেক যাত্রী নিয়ে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ ট্রেন চালানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এমন ব্যবস্থাপনায় লোকাল ট্রেন চালু হলে ‘স্টাফ স্পেশ্যাল’-এর মতো জোর করে ট্রেনে উঠে পড়তে পারেন যাত্রীরা। তখন আইন-শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে বলে মনে করছেন রেলকর্তাদের একাংশ। কম সংখ্যায় ট্রেন চললে, কোন রুটে কত লোকাল চলবে, তাও এখনও স্পষ্ট নয়। সে কথা মাথা রেখে আজ বুধবার বৈঠকে বসলেন রেল এবং রাজ্যের আমলারা। আগামিকাল, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টেয় রয়েছে দু’পক্ষের মধ্যে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। তার পরেই জানা যাবে, কোন ‘ফর্মুলায়’ চলবে লোকাল। প্রয়োজনে ২৫ শতাংশ লোকাল চালু করা হতে পারে বলেও জানা যাচ্ছে। প্রাথমিক ভাবে অবশ্য সকাল এবং বিকেলে অফিস টাইমে ২০০ থেকে ২৫০ লোকাল চালানোর বিষয়ে কথাবার্তা চলছে।
নিউ নর্মালে রেলকর্মীদের জন্য ‘স্টাফ স্পেশ্যাল’ ট্রেন চলছে। তাতে ওঠার জন্য নিত্যদিনই লেগে রেয়েছে গোলমাল। এই পরিস্থিতি সামাল দিতে রাজ্য এবং রেল লোকাল ট্রেন চালাতে সহমত হয়েছে। নিউ নর্মালে লোকাল পরিষেবা শুরু করতে আগেই চিঠি দিয়েছিল রেল। সম্প্রতি রাজ্যের তরফেও এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়। সোমবার রাজ্যের মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বরাষ্ট্র সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী সহ পদস্থ আমলারা রেল কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।
মেট্রোর মতো ই-পাস অথবা মুম্বইয়ের লোকালের মতো জরুরি পরিষেবায় কাজ করেন, এমন যাত্রীদের অগ্রাধিকারের পথে হাঁটে চাইছে না রাজ্য। তা হলে, কোনও ফরমুলায় লোকল ট্রেন-এর ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা যাবে, সে বিষয়ে এখনও সমাধান সূত্র এখনও অধরা। ট্রেনে ৫০ শতাংশ যাত্রী উঠছে কি না, তার হিসেব কী ভাবে রাখা হবে? তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। আবার জোর করে ট্রেনে যাত্রী উঠতে গেলে রেল পুলিশের বাধায় গোলমালও হতে পারে বলে মনে করছেন রেলকর্তারা। টিকিট বিক্রি নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়টিও চিন্তাভাবনা স্তরে রয়েছে।
আরও পড়ুন: দেশে মোট আক্রান্ত ৮৩ লক্ষ ছাড়াল, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ সংক্রমণ দিল্লিতে
প্রাক্তন রেলকর্তাদের একাংশ মনে করছেন, কম সংখ্যায় ট্রেন চললে, সমস্যা হতেই পারে। যাত্রীদের এ ভাবে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে কি? গ্যালপিং করা হলে অর্থাৎ সব স্টেশনে লোকাল না দাঁড়ালে, তাতেও রয়েছে বিপদ। রেল অবরোধ হতে পারে। ফলে বেশি সংখ্যায় লোকাল চালালে পরিস্থিতি তার থেকে ভাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে সে ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানতেই হবে। যদি করোনা ভুলে দূরত্ব বিধি না মেনে লোকাল চলতে থাকে, তা হলে কিন্তু অন্য বিপদ অপেক্ষা করছে।
আরও পড়ুন: চম্পাহাটির বাজি কারখানায় বিস্ফোরণ, পুড়ে ছাই অন্তত ১০টি ছোট কারখানা
শিয়ালদহে গড়ে ৯১৯টি লোকাল চলত। হাওড়ায় ৫০০টি। ভিড় নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি প্রাথমিক স্তরে কোনও রুটে বেশি লোকালের প্রয়োজন, সে বিষয়ে আলোচনা চলছে। আজ, নবান্নে বৈঠকে হাওড়া, শিয়ালদহ এবং খড়গপুর ডিভিশনের ডিআরএম, চিফ অপারেশনাল ম্যানেজার-সহ উচ্চপদস্থ কর্তারা আলোচনায় বসছেন। আগামিকাল বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।