নির্দেশ জেলা তৃণমূলের

ট্রেনেই যেতে হবে একুশের সমাবেশে

দলের কর্মী-সমর্থকদের ট্রেনে করে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্ব। কড়া ভাবে বলে দেওয়া হয়েছে, বাসে করে নিকটবর্তী স্টেশন পর্যন্ত আসা যেতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৫ ০১:২৩
Share:

পথে শাসক-বিরোধী। একুশে জুলাইয়ের শহিদ সমাবেশের প্রস্তুতিতে সোমবার তৃণমূলের মিছিল খড়্গপুরে।

দলের কর্মী-সমর্থকদের ট্রেনে করে ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা নেতৃত্ব। কড়া ভাবে বলে দেওয়া হয়েছে, বাসে করে নিকটবর্তী স্টেশন পর্যন্ত আসা যেতে পারে। তারপর ট্রেনে করেই হাওড়া পৌঁছতে হবে। হাওড়া থেকে মিছিল করে ধর্মতলা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, ‘‘জেলা থেকে দলের বেশির ভাগ কর্মী-সমর্থক ট্রেনে করেই সমাবেশে যাবেন। ব্লকস্তরে সেই মতো পদক্ষেপ করা হয়েছে।’’

Advertisement

কলকাতার সমাবেশে যাওয়ার জন্য তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের একটা বড় অংশ বাস ভাড়া করতেন, এত দিন এটাই ছিল দস্তুর। রাজ্যপাটে দল ক্ষমতায় আসার পরে অবশ্য এই প্রবণতায় রাশ টানতে উদ্যোগী হন শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব। নেতৃত্বের একাংশ মনে করেন, ব্লকস্তরের বেশির ভাগ কর্মী-সমর্থক ট্রেনে করে সমাবেশে গেলে জোর করে টাকা আদায়ের মতো অভিযোগও উঠবে না। কারণ, বাস ভাড়া করার জন্যই তো টাকার প্রয়োজন হত। নেতৃত্বের ওই অংশ মানছেন, কর্মী-সমর্থকেরা ট্রেনে করে সমাবেশে গেলে একদিকে বাস ভাড়া বাঁচবে, বাড়তি উন্মাদনা দেখা দেবে। কারণ, ৫০- ৬০ জন মিলে বাসে যাওয়া, আর শয়ে শয়ে লোক মিলে ট্রেনে যাওয়া দু’টো এক ব্যাপার নয়। তৃণমূলের এক জেলা নেতার কথায়, “বাসে করে ৫০- ৬০ জন মিলে যাওয়ার যা আনন্দ, ট্রেনে করে কয়েকশো কর্মী- সমর্থকেরর সঙ্গে যাওয়ার আনন্দ তার চেয়ে অনেক বেশি। ট্রেনে করে যাওয়ার ফলে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে বাড়তি উন্মাদনাও দেখা দেবে।”


কেন্দ্র ও রাজ্যের দুর্নীতির প্রতিবাদে মেদিনীপুরে পথে নামল বামেরা।

Advertisement

যে সব এলাকার কাছাকাছি স্টেশন নেই, সেই সব এলাকা থেকে সমাবেশে যাওয়ার জন্য স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব বাস ভাড়াই করেছেন। তবে সংখ্যাটা খুব কম। বেশিরভাগ বাস ভাড়া করা হয়েছে নিকটবর্তী স্টেশনে আসতে। জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জেলা সম্পাদক মৃগাঙ্ক মাইতি বলেন, “সমাবেশের জন্য কম বাসই ভাড়া করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাস্তায় বাস থাকবে।” ২১ জুলাইয়ের সমাবেশের জন্য জেলায় বাস-পরিবহণ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে না বলেই জানাচ্ছেন বাস মালিকেরা। কিছু রুটে বাস কম থাকবে।

২১শে জুলাইয়ের প্রস্তুতিতে মেদিনীপুর শহরে দলের বিভিন্ন শাখা সংগঠনকে পথে নামিয়েছে তৃণমূল। মিছিল-মিটিংয়ে শক্তি প্রদর্শনের চেষ্টা চালিয়েছে। সারদা কাণ্ড-সহ একের পর এক ঘটনায় দল বিড়ম্বনায়। আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে জেলেও গিয়েছেন দলের সাংসদ-মন্ত্রী-নেতারা। শুধু রাজ্য নয়, ব্লক-জেলাস্তরেও দুর্নীতি বাসা বাঁধতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি দেখে মেদিনীপুরে কর্মিসভা করতে এসে দলের কর্মী- সমর্থকদের সতর্কবার্তা দিয়ে গিয়েছেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী। বুঝিয়ে দিয়েছেন, দলের কেউ কোনও অন্যায় কাজের সঙ্গে জড়িয়ে গেলে দল তাঁর পাশে থাকবে না।

সোমবারও প্রস্তুতি খতিয়ে দেখেন তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। মেদিনীপুর, খড়্গপুর সহ বিভিন্ন স্টেশনের সামনে শিবির করা হয়। শিবির থেকে ব্যাজ বিলি হয়। তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেনবাবু বলেন, “জেলা থেকে লক্ষাধিক মানুষ ধর্মতলার সমাবেশে যাবেন। বেশির ভাগ কর্মী- সমর্থক ট্রেনে করেই যাবেন। তবে কিছু এলাকায় বাস- লরি ভাড়া করা হয়েছে। কিছু এলাকায় ছোট লরিও ভাড়া করা হয়েছে।” দীনেনবাবুর দাবি, ‘‘শুধু দলের কর্মী- সমর্থকরাই নন, সাধারণ মানুষও শিবিরে এসে সমাবেশের ব্যাজ নিয়ে গিয়েছেন।’’

জঙ্গলমহলের এই জেলা থেকে লক্ষাধিক মানুষ ধর্মতলার সমাবেশে যাবেন বলে দাবি শাসক দলের জেলা নেতৃত্বের। দীনেনবাবুর কথায়, “২১ জুলাইয়ের সমাবেশের সমর্থনে গত এক মাস ধরে জেলা জুড়ে মিটিং-মিছিল-পথসভা-সভা সংগঠিত হয়েছে। দলের শাখা সংগঠনগুলো পথে নেমেছে। সমাবেশকে ঘিরে দলের কর্মী- সমর্থকদের মধ্যে উত্‌সাহ-উদ্দীপনাও দেখা দিয়েছে।”

ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement