প্রায় আড়াই বছর আগে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে একটি পোষা কুকুরের ডায়ালিসিসের উদ্যোগকে ঘিরে তোলপাড় শুরু হয়েছিল। এত দিনে সেই ব্যাপারে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলকে তদন্ত করার নির্দেশ দিল মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া (এমসিআই)। তদন্ত শেষ করতে হবে তিন মাসে।
এমসিআই সূত্রে বলা হয়, ২০১৫ সালের জুনে এসএসকেএম বা পিজি-তে কুকুরের ডায়ালিসিসের ব্যবস্থা হয়েছিল বলে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে অভিযোগ জমা পড়ে। অভিযোগে বলা হয়, পিজি-র নেফ্রোলজি বিভাগের তৎকালীন প্রধান রাজেন্দ্র পাণ্ডের কাছে ওই কুকুরের ডয়ালিসিস করার আবেদন জানান তৃণমূলের চিকিৎসক-নেতা ও রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের তৎকালীন সভাপতি নির্মল মাজি। রাজেন্দ্রবাবু এই ব্যাপারে এসএসকেএমের অধিকর্তা প্রদীপ মিত্রের অনুমতিও পেয়ে যান বলে অভিযোগ।
ওই তিন চিকিৎসকের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তাঁদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলে অভিযোগপত্র পেশ করেন প্রবাসী চিকিৎসক তথা রোগীদের স্বার্থরক্ষায় তৈরি একটি সংস্থার প্রধান কুণাল সাহা। অভিযোগপত্রে তিনি বলেন, যে-তিন চিকিৎসক (নির্মল মাজি, রাজেন্দ্র পাণ্ডে ও প্রদীপ মিত্র) ওই অনৈতিক কাজের সঙ্গে যুক্ত, তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ওই তিন জন এমন একটা কাজ করার চেষ্টা করছিলেন, যা চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কালো অধ্যায় বলে অভিযোগ কুণালবাবুর।
ওই ঘটনায় রাজ্য সরকার কোনও তদন্তের নির্দেশ দেয়নি। কুণালবাবু গত ১০ জুলাই এমসিআইয়ের হস্তক্ষেপ চান। কাউন্সিলের ‘এথিক্স’ বা নীতি নির্ধারণ কমিটি ৪ নভেম্বর রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের কাছে চিঠি পাঠিয়ে বলে, তিন মাসের মধ্যে অভিযোগ খতিয়ে দেখে বিষয়টির নিষ্পত্তি করে তা এমসিআই-কে জানাতে হবে। ওই সময়ের মধ্যে রাজ্য কাউন্সিল বিষয়টির নিষ্পত্তি না-করলে বা রাজ্য কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অভিযোগকারীর মনঃপূত না-হলে কুণালবাবুকে ফের এমসিআইয়ের কাছে আবেদন জানাতে বলা হয়েছে।
রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের এক কর্তার মন্তব্য, এটা খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। নির্দেশ খতিয়ে দেখে যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেওয়া হবে। মূলত যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই রাজেন্দ্র পাণ্ডে বলেন, ‘‘কাউন্সিল ডাকলে যাব। তদন্তের বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। যাঁরা তদন্ত করবেন, তাঁরাই বলতে পারবেন।’’