হাজিরা: ইডির অফিস থেকে বেরোচ্ছেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার। ছবি: শৌভিক দে।
বুধবার এসেছিলেন ফিরহাদ হাকিম। বৃহস্পতিবার হাজিরা দিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়। নারদ কাণ্ডের তদন্তে কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের মন্ত্রীকে টানা প্রায় সাত ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করলেন ইডি-র তদন্তকারীরা। তাঁদের একাংশের দাবি, শোভন বলেছেন, তিনি নারদ কর্তা ম্যাথু স্যামুয়েলকে চেনেন না। কোনও দিন দেখেননি। এমনকী, তাঁকে এ ভাবে কেউ কখনও টাকা দিয়েছেন, সে কথাও তাঁর মনে পড়ছে না।
শোভনকে এর আগে দু’বার তলব করেছিল ইডি। দু’বার দু’রকম কারণ দেখিয়ে আসেননি তিনি। তৃতীয় বার তলব পেয়ে এ দিন দুপুর দেড়টা নাগাদ সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে ইডি অফিসে হাজির হন তিনি।
তদন্তকারীদের বক্তব্য, গোড়ায় ম্যাথুর ছবি দেখিয়ে শোভনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, এমন কোনও লোকের সঙ্গে তিনি দেখা করেননি। প্রশ্ন ওঠে, তবে কি পুরো ঘটনাটি মিথ্যা? তখন নিজের আগের বয়ান সামান্য বদল করে মেয়র জানান, এমন কোনও ব্যক্তির সঙ্গে দেখা হয়েছে বলে তাঁর মনে পড়ছে না।
আরও পড়ুন: ‘ম্যানমেড’ কেন, ব্যাখ্যা সেচমন্ত্রীর
ইডি সূত্রের খবর, মনে না পড়ার কারণ হিসেবে শোভন বলেছেন, কলকাতার ডেপুটি মেয়র তথা তৃণমূল বিধায়ক ইকবাল আহমেদের সূত্রে অনেকে তাঁর কাছে আগেও এসেছেন, এখনও আসেন। সকলকে মনে রাখা সম্ভব নয়। মেয়র আরও বলেছেন, দর্শনার্থীদের অনেকে দলের জন্য ‘ডোনেশন’ দেন। দলীয় কোনও কর্মী বা পরিচিত কারও মাধ্যমে কেউ এসে দলের জন্য টাকা দিতে চাইলে সে টাকা নেওয়া হয় বলেও এ দিন শোভন তদন্তকারীদের জানান। কিন্তু, নির্দিষ্ট করে ম্যাথুর কথা বা তাঁর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা তাঁর মনে পড়ছে না — এই বয়ান থেকে এ দিন এক চুলও সরেননি তিনি। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ ইডি দফতর থেকে বেরিয়ে শোভন বলেন, ‘‘ওঁরা ডাকলে আবার আসব। তদন্তে আমি সব রকম সহায়তা করবো।’’
ইডি সূত্রের দাবি, মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম-সহ এখনও যে চার জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে, তাঁরা সকলেই টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। ফলে শোভনের বয়ানে তাঁরা খানিকটা অবাক। তাঁর কাছে সম্পত্তি ও আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত হিসেব চাওয়া হয়েছে। আজ, শুক্রবার আর এক মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের ইডি-তে যাওয়ার কথা।