ফাইল চিত্র।
এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট বা ইডি-র প্রথম বারের তলবে হাজিরা দেননি তিনি। সিবিআইয়েরও প্রথম ডাকে বুধবার তাদের দফতরে হাজির হলেন না কলকাতার মেয়র ও রাজ্যের পরিবেশমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়।
ইডি-র তৃতীয় দফার ডাকে তাদের সল্টলেকের অফিসে গিয়েছিলেন শোভনবাবু। সিবিআইয়ের দফতরে যাবেন কবে? নারদ-কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত মেয়র এ দিন সিবিআই-কে ফোনে জানান, কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি তদন্তকারী অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সময় চেয়ে নেবেন। তলব সত্ত্বেও এ দিন সিবিআইয়ের কাছে হাজিরা দিলেন না কেন? মেয়র ব্যক্তিগত কাজের কারণ দেখিয়েছেন বলে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর।
স্টিং অপারেশনের পরে নারদ নিউজের কর্ণধার ম্যাথু স্যামুয়েল ভিডিও ফুটেজ দেখিয়ে অভিযোগ করেছিলেন, শোভনবাবু এবং রাজ্যের শাসক দলের অন্য কয়েক জন তাবড় নেতা প্রচুর টাকা নিয়েছেন। ইডি এবং সিবিআই সমন্বয়ের ভিত্তিতে সেই ঘটনার তদন্ত করছে। তিন দফা তলবের পরে ইডি-র দফতরে হাজির হয়ে ম্যাথুর কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করেছিলেন মেয়র।
একই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য শোভনবাবুকে নোটিস দিয়ে এ দিন ডেকে পাঠিয়েছিল সিবিআই। কিন্তু তিনি যে যেতে পারছেন না, সে-কথা কোনও চিঠি বা ই-মেল মারফত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে জানাননি মেয়র। অথচ গরহাজিরার ক্ষেত্রে আইনজীবীর মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়ে কারণ দর্শানোটাই দস্তুর। এ দিন হাজিরা না-দিলেও মেয়র ফোন করে তদন্তকারীদের জানান, কয়েক দিনের মধ্যে তিনি নিজে থেকেই তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করবেন।
সিবিআইয়ের এক কর্তার কথায়, মেয়র নিজে থেকে যোগাযোগ না-করলে কয়েক দিনের মধ্যে ফের তাঁর কাছে তলবি নোটিস পাঠানো হবে। প্রয়োজনে আইনি পদক্ষেপ করা হবে। ওই সিবিআই-কর্তা আরও জানান, নারদ তদন্তের প্রতিদিনের অগ্রগতি দিল্লিতে তাঁদের সদর দফতরে জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা যেমন নির্দেশ দেবে, সেই অনুযায়ী কাজ এগোবে।
একই মামলায় ৪ সেপ্টেম্বর মেয়রের স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়কে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি। তিনি যাবেন কি না, বুধবার রাত পর্যন্ত তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি কেউ। নারদ-কাণ্ডে নাম জড়িয়ে তাঁর স্বামীকে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে মেয়র-পত্নী আগেই নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ করেছেন। তাঁকে তলব করার কারণ হিসেবে ইডি-র বক্তব্য, নারদ মামলায় অভিযুক্তদের নিকটজনদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা এবং তাঁদের সম্পত্তির হিসেব নেওয়া দরকার বলে মনে করছে তারা। তা ছাড়া তদন্তকারীদের জিজ্ঞাসাবাদের জবাবে মেয়র জানান, তাঁর টাকার হিসেব রাখেন রত্নাদেবীই। সেই হিসেব পেতে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
নারদ-কর্তার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়ের কাছেও তলবি নোটিস পাঠিয়েছে সিবিআই। আজ, বৃহস্পতিবার সিবিআইয়ের দফতরে ডাকা হয়েছে তাঁকে। তবে তদন্তকারী সংস্থা সূত্রের খবর, সংসদীয় কমিটির বৈঠক থাকায় আইনজীবীর মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়ে সময় চেয়ে নিয়েছেন দমদমের সাংসদ সৌগতবাবু।