ইডি-র নজরে শোভনের ‘ভোলবদল’, জেরা স্ত্রীকে

বৃহস্পতিবার সকালে সল্টলেকে ইডির দফতরে হাজির হয়েছিলেন রত্না। প্রায় ৬ ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, রত্না তাঁর নিজের ব্যবসা সংক্রান্ত নথি জমা দিয়েছেন। তবে সেই নথি যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:৩২
Share:

ইডির দফতরে শোভন-পত্নী রত্না চট্টোপাধ্যায়। নিজস্ব চিত্র।

নারদ কেলেঙ্কারির জেরায় মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায় ইডি-র দফতরে গিয়ে জানিয়ে এসেছিলেন, তাঁর ব্যবসায়িক সব বিষয় স্ত্রী রত্নাদেবীই দেখাশোনা করেন। এ বিষয়ে স্ত্রীর উপরেই তিনি নির্ভরশীল। আবার এর কিছু দিন পরে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলায় এই শোভনবাবুই স্ত্রী-র বিরুদ্ধে চূড়ান্ত আর্থিক নয়ছয় ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ এনেছেন। মেয়রের এই ‘ভোলবদলই’ এখন ইডি-র তদন্তকারীদের নজরে।

Advertisement

বৃহস্পতিবার সকালে সল্টলেকে ইডির দফতরে হাজির হয়েছিলেন রত্না। প্রায় ৬ ঘণ্টা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। ইডি সূত্রে জানা গিয়েছে, রত্না তাঁর নিজের ব্যবসা সংক্রান্ত নথি জমা দিয়েছেন। তবে সেই নথি যথেষ্ট নয় বলে জানিয়েছেন তদন্তকারীরা। শোভনবাবু ও তাঁর ব্যবসার আরও নথি রত্নাকে জমা দিতে বলেছেন তদন্তকারীরা।

ভিন্‌ রাজ্যে শোভন ও রত্নার একটি ব্যবসায়িক সংস্থার হদিস মিলেছে বলে তদন্তকারীরা দাবি করেছেন। বিশেষ করে সেই সংস্থাটির কাগজপত্রই চাওয়া হয়েছে রত্নাদেবীর কাছে। তদন্তকারী সূত্রের খবর, দু’এক দিনের মধ্যেই রত্নাদেবী সেই সংস্থার নথিপত্র ইডি-কে দেবেন বলে জানিয়েছেন। এ দিন রত্না বলেন, ‘‘তদন্তের প্রয়োজনে ইডি যত বার ডাকবে, আমি তত বারই আসব।’’

Advertisement

তদন্তকারীরা বলছেন, তাঁদের কাছে এসে শোভন দাবি করেছিলেন— তাঁর ব্যবসায়িক সব বিষয় দেখার ভার তিনি স্ত্রীকেই দিয়েছেন। ধরে নিতে হয়, রত্নাদেবীর প্রতি এ বিষয়ে তাঁর আস্থা রয়েছে বলেই তিনি ব্যবসার দিকটি তাঁকে দেখাশোনা করতে দিয়েছেন। কিন্তু এর পরে তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিবাহবিচ্ছেদের যে মামলাটি করেছেন, তাতে শোভন বলেছেন— তাঁর অজান্তে তাঁর নামে করা বিভিন্ন লগ্নি ভাঙিয়ে রত্নাদেবী বিলাসবহুল জীবনযাপন করেন। তাঁর সই করা ব্ল্যাঙ্ক চেকও তাঁকে না জানিয়ে ভাঙিয়ে নিয়েছেন স্ত্রী। এক তদন্তকারীর বক্তব্য— আর্থিক বিষয়ে যে স্ত্রী-র প্রতি মেয়রের এত অনাস্থা, দীর্ঘদিন ধরে যাঁর অর্থ নয়ছয়ের বিষয়টি তাঁর গোচরে রয়েছে, তাঁকে কেন ব্যবসার সব দায়িত্ব দিয়ে রাখা হবে! ইডি-র প্রশ্ন, তা হলে কি দায় এড়াতেই ব্যবসা সংক্রান্ত সব বিষয়ের ভার স্ত্রীর ওপর চাপিয়েছেন শোভনবাবু?

শোভনকে জেরার পরে রত্নাদেবীকে তিন বার তলবি নোটিস পাঠিয়েছিল ইডি। কিন্তু চিকিৎসার প্রয়োজনে তিনি বেশ কয়েক মাস লণ্ডনে ছিলেন। সম্প্রতি তিনি কলকাতায় ফিরেছেন। বৃহস্পতিবার সকালে সাড়ে ১০টা নাগাদ ইডির অফিসে আসেন রত্নাদেবী। ব্যবসা সংক্রান্ত নথি জমা দিতে বলা হয়েছিল তাঁকে। রত্নাদেবী যে কাগজপত্র জমা দেন, তাতে দু’জনের ব্যবসার নথি খুব কমই ছিল। তদন্তকারীরা যৌথ ব্যবসার নথিপত্র, বিশেষ করে ভিন্‌ রাজ্যে তাঁদের দু’জনের একটি বিশেষ ব্যবসায়িক সংস্থার কাগজপত্র চান। সেই সংস্থার আর্থিক লেনদেনের হিসাবও দিতে বলেন। তদন্তকারী সূত্রে খবর, রত্নাদেবী সেগুলি শীঘ্রই দিয়ে যাবেন বলে ইডি-র অফিসারদের জানিয়েছেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement