রাস্তায় পোড়ানো হল জগদীপ ধনখড়ের কুশপুতুল। —নিজস্ব চিত্র।
রাজ্যসভার সাংসদ পদে শপথ নেওয়ার সময় হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম নেওয়ায় তাঁর শপথ অনুষ্ঠান বাতিল করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেছেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর। সেই ঘটনায় পথে নামলেন মতুয়াদের একাংশ। বৃহস্পতিবার উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ ও হেলেঞ্চায় প্রতিবাদ সভা করলেন তাঁরা। সেখানে পোড়ানো হল রাজ্যসভার চেয়ারম্যান তথা উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড়ের কুশপুতুলও।
মতুয়া সমাজের প্রথম নারী হিসেবে বুধবার রাজ্যসভায় শপথ নিয়েছেন মমতাবালা। কিন্তু শপথ নিতে গিয়ে তাঁকে ‘রাজনীতির’ মুখোমুখি হতে হয়েছে বলে অভিযোগ। তাঁর দাবি, রাজ্যসভার সাংসদ পদে তাঁর আরাধ্য দেবতা হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে শপথ নিয়েছিলেন তিনি। পরে সেই শপথ বাতিল করে নতুন করে শপথ নিতে বলা হয়। মমতাবালা বলেন, “২০১৪ সালে কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামেই শপথ নিয়েছিলেন সংসদে। আমি নিজেও এর আগে লোকসভার সাংসদ হিসাবে শপথ নেওয়ার সময় ঠাকুরের নাম নিয়েছিলাম।” এই ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নিশানা করেছেন মমতাবালা। তাঁর দাবি, মোদী-শাহের নির্দেশেই এটা করা হয়েছে। পরে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “হরিদাঁদ ঠাকুর ও গুরুচাঁদ ঠাকুরের নাম করায় রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় শপথ অনুষ্ঠান বন্ধ করে দেন। এই জন্যই আমরা বিজেপিকে বাংলা-বিরোধী বলি।”
বৃহস্পতিবার মতুয়াদের বিক্ষোভ প্রসঙ্গে মমতাবালা বলেন, ‘‘রাজ্যসভার সাংসদ হিসেবে আমাদের ইষ্টদেবতার নাম আমাকে উচ্চারণ করতে দেওয়া হয়নি। তারই প্রতিবাদে মতুয়ারা রাস্তায় নেমেছেন।’’ বনগাঁ লোকসভা তৃণমূল প্রার্থী বিশ্বজিৎ দাস বলেন, ‘‘২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে জেতাতে পারেননি ধনখড়। সেই জন্য প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে এই কাজ করেছেন।’’
মমতাবালার অভিযোগ প্রসঙ্গে বুধবারই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী তথা বনগাঁর বিদায়ী বিজেপি সাংসদ শান্তনু ঠাকুর বলেন, “এক জন অশিক্ষিত মানুষকে সংসদে পাঠালে যা হয়। ভারতের সংবিধান তো মানতে হবে। ওঁর (মমতাবালা) উচিত ছিল শপথের শুরুতে বা শেষে বলা ‘জয় হরিচাঁদ, জয় গুরুচাঁদ’। আমি তা-ই বলেছিলাম। তার পরে বলেছিলাম ঈশ্বরের নামে শপথ...। এটা করলে সমস্যা হত না।”