—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
অঙ্ক নিয়ে রয়েছে ভীতি। অথচ বহু ক্ষেত্রেই অঙ্ক ছাড়া উচ্চশিক্ষায় এগোনো যাবে না। এই পরিস্থিতিতে বিজ্ঞান শাখা বাদে কলা এবং বাণিজ্য শাখার পড়ুয়াদের অনেককেই উচ্চ মাধ্যমিকে ইচ্ছা না থাকলেও অঙ্ক রাখতে হয়। বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে পড়ছেন যে পড়ুয়া, তিনি যে মানের অঙ্কের পাঠ্যক্রম পড়ছেন, সেটা তাঁকেও পড়তে হচ্ছে। এই অসুবিধা দূর করার জন্য অঙ্ক বইকে তিন ভাগে ভাগ করে দিচ্ছে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ।
যাঁরা কলা বিভাগে পড়বেন, অথচ অঙ্ক রাখবেন, তাঁদের জন্য তৈরি হচ্ছে ‘বেসিক ম্যাথমেটিক্স।’ যাঁরা বাণিজ্য শাখায় পড়বেন, তাঁদের পড়তে হবে ‘কমার্শিয়াল ম্যাথমেটিক্স’, যাঁরা বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে পড়বেন তাঁরা পড়বেন ‘পিওর ম্যাথমেটিক্স’। এমনটাই জানালেন উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সচিব প্রিয়দর্শিনী মল্লিক। প্রিয়দর্শিনী বলেন, “যাঁরা কলা বা বাণিজ্য শাখায় পড়ছেন, অথচ অঙ্ক নিয়েছেন, তাঁদের বিজ্ঞান শাখার পড়ুয়াদের মতো বিস্তারিত অঙ্ক না করলেও চলে। অথচ এত দিন তাঁদের সেই বিস্তারিত পাঠ্যক্রম পড়তে হচ্ছিল। ফলে অঙ্কের প্রতি ভীতি যেমন থেকে যাচ্ছিল, সেরকমই অঙ্কের নম্বরও কম উঠত। এই অসুবিধা দূর করার জন্যই তিন ধরনের অঙ্ক পাঠ্যক্রম চালু করা হচ্ছে।”
প্রিয়দর্শিনী জানান, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সিলেবাস কমিটির বিশেষজ্ঞেরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন। আশা করা যায়, আগামী বছর থেকে এই তিন ধরনের অঙ্ক চালু করা যাবে। প্রিয়দর্শিনীর দাবি, এর ফলে অঙ্ক নিয়ে ভীতি কমবে।
শিক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ যদি তিন ধরনের অঙ্ক চালু করে তা হলে পড়ুয়ারা সত্যিই উপকৃত হবে। ইতিমধ্যে সিবিএসই বোর্ডে নবম-দশম স্তরে দুই ধরনের অঙ্ক পাঠ্যক্রম রয়েছে। যাঁরা ভবিষ্যতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়বেন, তাঁদের অঙ্ক যতটা বিস্তারিত করতে হয়, যারা ভবিষ্যতে বিজ্ঞান নিয়ে পড়তে ইচ্ছুক নন, তাঁদের বিস্তারিত অঙ্ক না করলেও চলে। এর ফলে অযথা চাপ তৈরি হয় না। তবে শুধু অঙ্ক নয়, আগামী বছর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ চতুর্থ সিমেস্টারে বাংলা, ইংরেজি সহ বেশ কিছু বিষয়ের পাঠ্যক্রমে কিছুটা পরিবর্তন হচ্ছে। উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেন, “পড়ুয়াদের যাতে উচ্চশিক্ষায় গিয়ে কোনও অসুবিধা না হয়, সেই দিক থেকে চিন্তা করে খুব সামান্য কিছু পরিবর্তন হচ্ছে। কয়েকটি বিষয়ের পাঠ্যক্রমের বিস্তারিত অংশ একটু ছোট হতে পারে। আবার কিছু ক্ষেত্রে পাঠ্যক্রমে নতুন অধ্যায় যোগ হবে। এই বিষয়ে বিস্তারিত কিছুদিনের মধ্যে জানানো হবে।” পর্ষদ কর্তাদের দাবি, চতুর্থ সিমেস্টারের বই এখনও প্রকাশিত হয়নি। ফলে, এই পরিবর্তনে প্রকাশকদের বই প্রকাশে অসুবিধাহবে না।