প্রতীকী চিত্র।
একুশ তারিখ রাতে সেই যে চায়ের দোকান বন্ধ করেছিলেন বগটুই গ্রামের পশ্চিমপাড়ার বাসিন্দা মকসদ শেখ, তার সাত দিন পরে আবার খুললেন। গণহত্যার ঘটনায় যতটা চর্চায় বগটুই গ্রাম, ততটাই চর্চায় এসেছে মকসদের চায়ের দোকানও।
রামপুরহাটে, জাতীয় সড়কের ধারে বগটুই মোড়ের এই দোকানের অদূরেই ২১ মার্চ রাতে দুষ্কৃতীদের বোমার আঘাতে প্রাণ হারান তৃণমূলের উপপ্রধান ভাদু শেখ। সেই থেকে বন্ধ ছিল ওই দোকান। যেখানে ভাদু খুন হন, সেই জায়গা এখনও বীরভূম পুলিশ লেখা লোহার ব্যারিকেড ও ইট দিয়ে ঘেরা। পথ চলতি মানুষজন এখনও ওই এলাকা দিয়ে পেরোলেই ভাদু খুন হওয়ার জায়গা আঙুল দিয়ে দেখান। কেউ কেউ থানিক থমকে জায়গাটা ভাল করে দেখে এগিয়ে যান।
মকসদ জানালেন, ভাদু শেখ যখন খুন হন, তখন রাত সাড়ে আটটা। রোজের মতো মকসদ চায়ের দোকান বন্ধ করার তোড়জোড় করছিলেন। মকসদের কথায়, ‘‘দোকানের জিনিসপত্র কাঠের আলমারিতে রেখে তালা বন্ধ করার সময়ই বোমা মারার শব্দ হয়। বিপদ বুঝে আমি কোনও ক্রমে দোকান বন্ধ করে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাই। তার পরে আরও দু’টো বোমার আওয়াজ পাই। তার পরেই শুনি ভাদু শেখ খুন হয়েছে। তার পর থেকেই আর দোকান খুলতে পারিনি।’’ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন থাকলেও দোকান খোলার সাহস পাননি বলে জানালেন মকসদ।
অথচ বগটুই মোড়ের মাথায় এই ছোট চায়ের দোকানের উপরে নির্ভর করেই মকসদের সংসার চলে। কিন্তু ভাদু-খুনের পরে গ্রামে হামলা ও ৯ জনের মৃত্যুর জেরে আতঙ্কে তিন-চার দিন মোড়ের মাথাতেই আসেননি মকসদ। তাঁর মতো এলাকার আরও কয়েক জন দোকানদার এখনও সেই রাতের আতঙ্ক কাটাতে পারেননি। বগটুই মোড়ের অনেক দোকানি এখন সন্ধ্যা নামলেই দোকান বন্ধ করে বাড়ি চলে যান। ফলের দোকানি ওসি শেখ বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে এই মোড়ে ব্যবসা করছি। এ রকম আতঙ্কের পরিবেশ কোনও দিন দেখিনি।’’ ব্যবসায়ীদের দাবি, আতঙ্কের পরিবেশ কাটিয়ে মানুষ যাতে শান্তিপূর্ণ ভাবে বসবাস করতে পারে, তার ব্যবস্থা পুলিশ-প্রশাসনকে করতেই হবে।