—ফাইল চিত্র।
পেরিয়ে গিয়েছে ভর্তির শেষ দিন। কিন্তু কয়েক বছরের ধারাবাহিকতা মেনেই যেন কলেজে কলেজে ফাঁকা রয়ে গিয়েছে বেশ কিছু আসন!
এ বছর রাজ্য জুড়ে স্নাতক স্তরে ভর্তির প্রক্রিয়া পুরোপুরি চালানো হয়েছে অনলাইনে। ভর্তি-দুর্নীতি আটকাতেই রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনেক ছাত্রছাত্রীই একাধিক কলেজে অনলাইনে আবেদন করেছেন। সাধারণ ভাবে পড়ুয়ারা যে-ক’টি কলেজে সুযোগ পান, প্রায় সবেতেই ভর্তি হয়ে যান। এ বার প্রথমে ভর্তির শেষ দিন ধার্য হয়েছিল ৭ জুলাই। কিন্তু ভর্তি-প্রক্রিয়া শুরুর মাঝপর্বেই আসন ফাঁকা থেকে
যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। অধ্যক্ষদের বক্তব্য, এমনিতেই তো আসন খালি থেকে যেতে পারে। তার উপরে কোনও ছাত্র বা ছাত্রী বিভিন্ন কলেজে ভর্তি হয়ে যাওয়ার পরে একটি প্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরু করে দিলে
অন্য যে-সব কলেজে তিনি ভর্তি হয়েছেন, সেখানকার আসনগুলিও ফাঁকা পড়ে থাকবে। যে-সব আসন শূন্য থেকে যাবে, সেগুলিতে নতুন করে পড়ুয়া ভর্তি করা যাবে কি না, সেই বিষয়ে কোনও সুস্পষ্ট নির্দেশ কলেজগুলির কাছে ছিল না। পরে উচ্চশিক্ষা দফতর ২৫ জুলাই পর্যন্ত ভর্তির দিন বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু তার পরেও বিভিন্ন কলেজে বহু আসন ফাঁকা হয়ে রয়েছে। এমনকি লেডি ব্রেবোর্ন, বেথুনের মতো নামী কলেজেও অনেক আসন খালি।
আসন ফাঁকা থাকার কারণ এক-এক কলেজে এক-এক রকম। লেডি ব্রেবোর্নের অধ্যক্ষা শিউলি সরকার বৃহস্পতিবার জানান, তাঁর কলেজে একশোর বেশি আসন খালি। তাঁর বক্তব্য, তাঁদের মেধা-তালিকা আগে বেরোয়। পরে বেরোয় প্রেসিডেন্সি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধা-তালিকা। দেখা গিয়েছে, ব্রেবোর্নে ভর্তি হয়ে অনেকেই পরে যাদবপুর, প্রেসিডেন্সিতে চলে যাচ্ছেন। তা ছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং এবং ডাক্তারি পড়তে চলে যাচ্ছেন, এমন পড়ুয়ার সংখ্যাও কম নয়। শিউলিদেবী এ দিন বলেন, ‘‘সব প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রক্রিয়া প্রায় একসঙ্গে না-চালালে এই সমস্যা থেকেই যাবে।’’ বেথুন কলেজের ছবিটাও প্রায় একই রকম। সেখানকার অধ্যক্ষা মমতা রায় জানান, তাঁর কলেজেও বেশ কিছু আসন ফাঁকা পড়ে রয়েছে। এবং তিনিও জানাচ্ছেন, ওই কলেজে ভর্তি হয়ে যাওয়ার পরে যাদবপুর বা প্রেসিডেন্সিতে চলে যাওয়াটাই আসন খালি থেকে যাওয়ার মূল কারণ। সেই সঙ্গে অনেকের ইঞ্জিনিয়ারিং ও ডাক্তারি পড়তে চলে যাওয়াটাও অন্যতম কারণ বলে জানান তিনি। প্রায় ৩০০ আসন ফাঁকা পড়ে আছে নিউ আলিপুর কলেজে। অধ্যক্ষ জয়দীপ ষড়ঙ্গী জানান, তাঁর কলেজে খালি আছে মূলত দর্শন, সংস্কৃত, উদ্ভিদবিদ্যার আসন। অর্থনীতিরও বেশ কিছু আসন ফাঁকা রয়েছে। ছাত্রছাত্রী পাওয়া যায়নি।
অনেক কলেজেই দেখা যাচ্ছে, তফসিলি পড়ুয়াদের জন্য সংরক্ষিত বহু আসন ফাঁকা। অনেক কলেজ অনুমতি নিয়ে সংরক্ষিত আসনকে অসংরক্ষিত করে ছাত্রছাত্রী ভর্তি করেছে। কিন্তু তাতেও সব আসন ভরানো যায়নি। মণীন্দ্রচন্দ্র কলেজ সংরক্ষিত আসনকে অসংরক্ষিত করে ভর্তি নিয়েছে। তা সত্ত্বেও খালি পড়ে রয়েছে দুই শতাধিক আসন। ভর্তির সময়সীমা বাড়িয়ে ২৫ জুলাই করায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রেশনের দিনও বাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু কলেজে কলেজে ফাঁকা আসন ভরাতে এ বছর নতুন করে ভর্তির
আর কোনও রকম সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করছে না শিক্ষা শিবিরের বড় অংশ।