—প্রতীকী ছবি।
সাত দিন আগে পুস্তক দিবস পালিত হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ওই দিনেই সব ছাত্রছাত্রীর হাতে বই পৌঁছে যাওয়ার কথা। কিন্তু রাজ্যের স্কুলগুলিতে পড়ুয়ারা এখনও সব বই পায়নি বলে অভিযোগ। ফলে ক্লাসে গিয়ে কী পড়াবেন, বুঝতে পারছেন না শিক্ষক-শিক্ষিকারা। শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই হোঁচট খাচ্ছে পঠনপাঠন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার গিলারচাঁদ হাইস্কুলে ইংরেজির শিক্ষক প্রণবকুমার পাইক জানান, তাঁদের স্কুলে সব থেকে সমস্যায় পড়েছেন নবম ও দশম শ্রেণির পড়ুয়ারা। ‘‘ইংরেজির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সব বই এখনও হাতে না-আসায় ক্লাসে পঠনপাঠন শুরু করতে পারিনি,’’ বললেন প্রণববাবু। তিনি জানান, শুধু তাঁদের স্কুলে নয়, দক্ষিণ ২৪ পরগনার বেশ কয়েকটি স্কুল একই সমস্যায় জেরবার।
জলপাইগুড়ি জেলার ময়নাগুড়ির বাগজান গার্লস হাইস্কুলের এক শিক্ষিকা জানান, তাঁদের স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির পরিবেশ বিজ্ঞান, ষষ্ঠ শ্রেণির ইংরেজি ও সপ্তম শ্রেণির দ্রুত পঠনের বই এখনও এসে পৌঁছয়নি। ওই শিক্ষিকা বলেন, ‘‘মেয়েরা বিজ্ঞান ও ইংরেজির মতো গুরুত্বপূর্ণ বই এখনও না-পাওয়ায় অভিবাবকরা খুবই অসন্তুষ্ট। অভিভাবকেরা জানতে চাইছেন, কবে মেয়েরা বই পাবে? আমরা কোনও উত্তর দিতে পারছি না।’’ হাওড়ার একটি স্কুলের এক শিক্ষিকার দাবি, দশম শ্রেণির ছাত্রীরা অঙ্কের বই পায়নি। ফলে পঠনপাঠনে পিছিয়ে পড়ছে তাঁদের ছাত্রীরা।
স্কুলশিক্ষা দফতরের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাবে অনেক স্কুল বই পাচ্ছে না বলে মনে করছেন শিক্ষা শিবিরের একাংশ। বিকাশ ভবন সূত্রের খবর, সব বই সরস্বতী প্রেসে ছেপে ডিস্ট্রিক্ট প্রোবেশন অফিসারদের অফিসে পৌঁছে গিয়েছে। ওখান থেকে সার্কেল অফিসেও তা পৌঁছে যাওয়ার কথা। সার্কেল অফিস থেকে সব বই নিয়ে আসার কথা স্কুল-কর্তৃপক্ষের। স্কুলশিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘ঠিক সময়ে সব পড়ুয়ার হাতে বই পৌঁছে দেওয়ার কাজটাকে আমরা সব থেকে বেশি অগ্রাধিকার দিই। কোনও কারণে কোথাও যদি অসুবিধা হয়, স্কুল-কর্তৃপক্ষ যেন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’’ বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের বক্তব্য, বই পেতে কয়েক দিন দেরি হতে পারে। এটা বাস্তব সমস্যা। ‘‘কিন্তু শিক্ষাবর্ষের শুরুতেই সকলে বই পেয়ে যাবে, এই দাবি না-করলেই ভাল হত। ছোট ছোট ছেলেমেয়ে আশা করে ছিল। কিন্তু বই পেল না,’’ আক্ষেপ স্বপনবাবুর।