নওশাদ সিদ্দিকী। —ফাইল চিত্র।
দেরিতে মনোনয়ন জমা পড়ায় ভাঙড়-২ ব্লকে আইএসএফের অধিকাংশ মনোনয়ন বাতিল করেছে নির্বাচন কমিশন। প্রতিবাদে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন ৮২ জন আইএসএফ প্রার্থী। বুধবার তাঁদের আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বিচারপতি অমৃতা সিংহের এজলাসে বিষয়টি উত্থাপন করেন। আজ, বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি হবে। ফিরদৌস বলেন, ‘‘কোর্টের নির্দেশের পরেও পুলিশ যথাযথ নিরাপত্তা দিয়ে বিডিও অফিসে নিয়ে যেতে পারেনি আমাদের প্রার্থীদের। গুলি-বোমার মধ্যেও মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন কিছু প্রার্থী। পরে সেগুলি বাতিল করা হয়েছে।’’ আদালতের রায় আসার আগেই অবশ্য ভাঙড়ের তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম বলেন, ‘‘বিরোধীদের নানা চক্রান্ত সত্ত্বেও আমরা ফের ভাঙড়-২ পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের সমস্ত আসনে জয়ী হয়ে বোর্ড গঠন করতে চলেছি।’’
ভাঙড়-১ ব্লকের ন’টি পঞ্চায়েতের ২২৩টি আসনের মাত্র দু’টিতে আইএসএফ প্রার্থী দিতে পেরেছে। বাকিগুলিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হতে চলেছে তৃণমূল। পঞ্চায়েত সমিতির ২৭টি আসনের সব ক’টিতেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে তৃণমূল। জেলা পরিষদের তিনটির মধ্যে ৪৯ নম্বর আসনটিতে শুধু ভোটাভুটি হবে। এখানে তৃণমূল ছাড়াও প্রার্থী দিয়েছে সিপিএম, বিজেপি, আইএসএফ।
একই পরিস্থিতি ক্যানিং-২ ব্লকে। ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের প্রায় সব আসনই বিনা ভোটাভুটিতে গিয়েছে তৃণমূলের ঝুলিতে। পঞ্চায়েত সমিতির একটি এবং জেলা পরিষদের একটি আসনে কেবলমাত্র ভোটাভুটি হবে।
মনোনয়ন-পর্বে ভাঙড় ১ এবং ২ ব্লকে সরাসরি সংঘর্ষ বেধেছিল তৃণমূল ও আইএসএফের। মনোনয়নের শেষ দিন, বৃহস্পতিবার ভাঙড়-২ ব্লকে দু’পক্ষের বোমা-গুলির লড়াইয়ে প্রাণ যায় এক আইএসএফ কর্মী ও তৃণমূলের দু’জনের। অভিযোগ ওঠে, ওই দিন সকাল থেকে বেলা ৩টে পর্যন্ত (মনোনয়ন জমা নেওয়ার নির্ধারিত সময়সীমা) ব্লক অফিস ঘিরে রেখেছিল তৃণমূলের লোকজন। ৩টের পরে এলাকার দখল নেয় আইএসএফ। রাত প্রায় সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তাদের ১১৩ জন মনোনয়ন জমা দেন। সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরে মনোনয়ন বেআইনি বলে দাবি করে হাই কোর্টে মামলা করে তৃণমূল। পরে ওই মনোনয়নগুলি বাতিল করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। দেখা যায়, ভাঙড়-২ ব্লকের ১০টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ২১৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ইতিমধ্যেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছে ৮৬টি আসনে। পঞ্চায়েত সমিতির ৩০টির মধ্যে ১৪টিতে একই ফল। জেলা পরিষদের তিনটি আসনের সব ক’টিতে জয়ী হয়েছে তারা। ক্যানিং-২ ব্লকে গোলমাল হয়নি মনোনয়ন ঘিরে। তৃণমূলের দাবি, বিরোধীদের সংগঠন না থাকায় এই এলাকায় প্রার্থীই খুঁজে পায়নি তারা।
আইএসএফের চেয়ারম্যান তথা স্থানীয় বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী বলেন, ‘‘প্রথম থেকেই তৃণমূল আমাদের মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দিচ্ছিল। তা সত্ত্বেও আমরা মনোনয়ন জমা দিয়েছিলাম। নানা কারণে তার অনেকগুলিই বাতিল করেছে প্রশাসন। আমরা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছি। আশা করছি, সুবিচার পাব।’’