—নিজস্ব চিত্র।
করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির মাঝেই মালদহে অন্য ভাইরাসের আতঙ্ক। তবে মানবদেহের বদলে এ ভাইরাসঘটিত ক্ষুরাই রোগে আক্রান্ত হচ্ছে গরুরা। এর জেরে গরুর দুধের উৎপাদন কমে যাচ্ছে। হতে পারে গর্ভপাতও। সংক্রমণ রুখতে জেলার প্রায় ৯ লক্ষ গরুকে বিনামূল্যে টিকাকরণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
মালদহের প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতর সূত্রে খবর, জেলার হবিবপুর, বামনগোলা এবং গাজোল ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার গরুদের মধ্যে ক্ষুরাই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর উৎপল কর্মকার বলেন, ‘‘ক্ষুরাই রোগে গরুর ক্ষুর এবং মুখে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। এই দু’জায়গায় ঘা হতে থাকে। আক্রান্ত গরুর দুধের উৎপাদন কমে যায়। এমনকি, গর্ভপাতও হতে পারে।’’
ক্ষুরাই রোগ ঠেকাতে টিকাকরণই একমাত্র উপায় বলে জানিয়েছেন প্রাণীসম্পদ বিকাশ দফতর কর্তারা। উৎপল বলেন, ‘‘ক্ষুরাই রোগ ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতে আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে জেলায় প্রায় ৮ লক্ষ ৮০ হাজার গরুকে ভ্যাকসিন দেব আমরা। অর্থাৎ জেলার মোট গরুর ৮০ শতাংশের টিকাকরণ হবে। ব্লকের প্রাণীসম্পদ কর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে এই ভ্যাকসিন দেবেন। সে জন্য ইতিমধ্যেই জেলায় চলে এসেছে এফএমডি ভ্যাকসিন। গোটা জেলা জুড়ে প্রচারও শুরু করে দিয়েছি আমরা।’’
টিকাকরণ কর্মসূচি শুরুর আগে অবশ্য দুশ্চিন্তা কাটছে না গরুপালকদের। হবিবপুর ব্লকের গরুপালক উদয় মণ্ডল জানিয়েছেন, গরুর ক্ষুরে ছত্রাকের মতো দাগ দেখা গিয়েছে। স্থানীয় পশুচিকিৎসাকেন্দ্রে তার চিকিৎসা চলছে। সন্তোষ ঘোষ নামে আর এক গরুপালক বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরেই গরুগুলো দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। খাওয়ার পরিমাণও কমিয়ে ফেলেছে। প্রাণীসম্পদ দফতরের চিকিৎসক জানান যে গরুগুলি ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত।’’ গাজোল ব্লকের নারায়ণচন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘‘দুধ উৎপাদনের পরিমাণ কমে যাওয়ায় সন্দেহ হয়েছিল। ব্লকের পশুচিকিৎসালয়ে চিকিৎসকের থেকে ক্ষুরাই রোগের বিষয়ে জানতে পারি।’’
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।