তাঁর প্রধানমন্ত্রিত্বে ইউপিএ সরকার বিভিন্ন জনমুখী সামাজিক প্রকল্প ও আর্থিক নীতি চালু করেছিল। কিন্তু কংগ্রেস সেগুলির যথাযথ প্রচারে ব্যর্থ হয়েছে। তার ফলে এখন ওই সব প্রকল্পকেই কেন্দ্রে মোদী এবং রাজ্যে মমতা নিজেদের সাফল্য হিসাবে দেখাতে চাইছেন। কলকাতায় শুক্রবার প্রদেশ কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে আলাপচারিতায় এই আক্ষেপের সুরই শোনা গেল মনমোহন সিংহের গলায়।
বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং তিন বিধায়ক সুখবিলাস বর্মা, অসিত মিত্র ও শঙ্কর মালাকার এ দিন আলিপুরের একটি পাঁচ তারা হোটেলে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। তাঁর সঙ্গে আলাদা ভাবে দেখা করেন কংগ্রেস নেতা সোমেন মিত্রও। দলীয় বিধায়কদের মনমোহন বলেন, কংগ্রেসই একমাত্র দল, যারা সাধারণ মানুষের স্বার্থে কাজ করে— এই কথা আগামী দিনে জনগণের সামনে তুলে ধরতে হবে। ইউপিএ আমলেই খাদ্য সুরক্ষা আইন পাশ হয়েছিল। তখন তৃণমূল সংসদে এর বিরোধিতাই করেছিল। রাজ্যেও সেই আইন কার্যকর করেনি। অথচ, সেই আইনকেই সামনে রেখে পরে মমতা খাদ্যসাথী প্রকল্প চালু করেছেন। একই ভাবে বিজেপি ইউপিএ জমানায় আধার কার্ড এবং জিএসটি-র তীব্র বিরোধিতা করেছিল। তারাই এখন সব ক্ষেত্রে আধার কার্ড বাধ্যতামূলক করছে। সংসদেও কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে জিএসটি-ও চালু করতে চলেছে।
কী ভাবে বিজেপি সাংসদ যশোবন্ত সিংহ সংসদীয় কমিটির বৈঠকে আধার কার্ডের বিরোধিতা করেছিলেন, সে প্রসঙ্গও এ দিন বর্ণনা করেন মনমোহন। মান্নানদের তিনি বলেন, গরিব মানুষের জন্য ইউপিএ আমলে ইন্দিরা গাঁধী আবাস যোজনা চালু হয়েছিল। মোদী তারই নাম পরিবর্তন করে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা দিয়েছেন এবং প্রকল্পটির কৃতিত্ব নিচ্ছেন। কন্যাদের সুরক্ষার জন্য চালু করা কেন্দ্রীয় প্রকল্পকেই মমতা ‘কন্যাশ্রী’ নাম দিয়েছেন। এই সব তথ্য মানুষের মধ্যে প্রচার করার জন্য মান্নানদের নির্দেশ দেন মনমোহন।
মান্নান প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, রাজ্যে তৃণমূলের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। বিজেপি-কে প্রতিহত করে তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রধান বিরোধী শক্তি হিসাবে উঠে আসতে বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের ঐক্য জরুরি। মনমোহন জানান, বিষয়টি তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে বলবেন।