গ্রাফিক— শৌভিক দেবনাথ।
খাস কলকাতায় ভোটারদের ঘুষ দিয়ে প্রভাবিত করার অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কলকাতা হাই কোর্টে এই অভিযোগ করেছেন মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের গত বিধানসভা নির্বাচনের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী কল্যাণ চৌবে। পদ্ম নেতার দাবি, তাঁর কেন্দ্রের মহিলাদের ৫০০ টাকা করে ঘুষ দেওয়া হয়েছিল।
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটে গোটা রাজ্যে ২১৫টি কেন্দ্রে জয়ী হয় তৃণমূল। মানিকতলার বিধানসভা কেন্দ্রেও জয়ী হন তৃণমূল প্রার্থী সাধন পান্ডে। পরাজিত হন কল্যাণ। ওই নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে মামলা করেন কল্যাণ। বুধবার মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের সেই ইলেকশন পিটিশন মামলাতেই হাই কোর্টে সাক্ষী দিলেন তিনি। আদালতকে তিনি জানান, রাজ্যের প্রাক্তনমন্ত্রী তথা মানিকতলা বিধানসভা কেন্দ্রের অধুনা প্রয়াত বিধায়ক সাধন পাণ্ডে ওই এলাকার মহিলাদের বলেছিলেন, প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে পৌঁছে যাবে তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে।
বুধবার হাই কোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তের এজলাসে শুনানি ছিল মামলাটির। বিচারপতি কল্যাণকে কাঠগড়ায় তুলে বয়ান রেকর্ড করান। ভোটে কারচুপির অভিযোগের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনটি বিষয় আদালতকে জানিয়েছেন কল্যাণ। তাঁর কথায়, প্রথমত, ভোটারদের নানা ভাবে ভয় দেখানো হয়েছে। দ্বিতীয়ত, টাকার বিনিময়ে ভোট চেয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী। তৃতীয়ত, ভোটে শাসকদল গন্ডগোল করেছে।
আদালতকে কল্যাণ বলেন, ‘‘৩১ নম্বর ওয়ার্ডে জল এবং বিদ্যুতের লাইন কাটার ভয় দেখানো হয়েছে। আমি বিজেপির প্রার্থী ছিলাম। আমি বহু অসহায় মানুষের কথা শুনেছি। এ-ও জেনেছি যে, তৃণমূল প্রার্থী ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী হওয়ার সুবাদে স্বর্নির্ভর গোষ্ঠীকে কাজে লাগিয়ে বিধানসভার ভোটারদের ৫০০ টাকা করে দিয়ে ভোট কিনেছেন।’’ কল্যাণ জানিয়েছেন, তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী ভোটারদের শুধু ৫০০ টাকা করে দেওয়ার কথাই বলেননি, পাশাপাশি তাঁদেরকে আশ্বস্ত করার জন্য তাঁদের থেকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্যও সংগ্রহ করেছিলেন। এছাড়া প্রচারেও নানা ভাবে বাধা দিয়েছিল তৃণমূল। উদাহরণ স্বরূপ কল্যাণ বলেন, তাঁর পোস্টারের উপর শাসকদলের পোস্টার লাগানো হয়েছিল। প্রমাণ দিতে আদালতকে কয়েকটি ছবিও দেখান তিনি।
আপাতত বৃহস্পতিবার আবার এই মামলা উঠবে শুনানির জন্য। ওই দিনও কল্যাণকে আদালতে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সেনগুপ্ত।