মানস ভুঁইয়া
এক মিনিটের ব্যবধান। তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইয়ার মোবাইলে পরপর দু’টি ফোন এল। মানসের অভিযোগ, সোমবার রাতে ওই দু’টি ফোনে তাঁকে খুনের হুমকি দেওয়া হয়েছে। সঙ্গে অশ্লীল গালিগালাজ।
মানস অনুগামী যুব তৃণমূলের ব্লক সভাপতি আবু কালাম বক্স সবং থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশের উঁচুমহলে বিষয়টি জানান সাংসদ। মোবাইল টাওয়ারে অবস্থান দেখে ভবেশ মাইতি নামে এক যুবককে আটক করে পুলিশ। বছর ৩৫ এর ভবেশ এলাকায় তৃণমূলের সমর্থক হিসাবেই পরিচিত। খড়্গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, “একজন যুবককে মোবাইল নম্বরের ভিত্তিতে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ওই যুবক কী উদ্দেশ্যে এমন হুমকি দিয়েছে খতিয়ে দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
সোমবার রাত রাত ৮টা ৫২মিনিট ও ৮টা ৫৩মিনিটে মানসের মোবাইলে দু’টি ফোন আসে। সাংসদের কথায়, ‘‘পরপর দু’বার ফোন করে আশ্রাব্য গালিগালাজ করে আমাকে মেরে ফেলবে বলে হুমকি দিয়েছে। আমার মনে হচ্ছে, এর পিছনে বড় মাথা রয়েছে। পুলিশ তদন্ত করে ব্যবস্থা নিক।” রাজ্য জুড়ে তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের এমন হুমকির অভিযোগ নতুন নয়। এমনকি, হুমকির মুখে পড়ে রাজ্যের বহু নেতা-মন্ত্রীর নিরাপত্তা বলয়ও বেড়েছে। ১৯৮২সাল থেকে বিধায়ক হিসাবে মানসের দু’জন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন। কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে এসে রাজ্যসভার সাংসদ হলেও মানসের নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা খাতায়কলমে বাড়েনি। এমন পরিস্থিতিতে শঙ্কিত মানস ভুঁইয়ার ঘনিষ্ঠ নেতা-কর্মীরা। আবু কালাম বলেন, “মানসদার জন্য যাদের স্বার্থ বিঘ্নিত হয়েছে তারাই এ কাজ করেছে বলে মনে হয়।” মানসের নিরাপত্তা আরও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন আবু কালাম। তবে সাংসদ নিজে বলছেন, “আতঙ্কিত নই। পুলিশ-প্রশাসন নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়ে বিবেচনা করে তবে করবে।”
স্থানীয়েরা জানিয়েছেন, ভবেশকে প্রায়ই মদ্যপ অবস্থায় দেখা যেত। ভবেশ তৃণমূল সমর্থক হলেও মানস বিরোধী শিবিরের লোক হিসাবেই পরিচিত। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ অমূল্য মাইতি বলেন, ‘‘খুব দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। একসময়ে মানস ভুঁইয়ার ঘনিষ্ঠ কেউ-কেউ এই যুবককে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বলে শুনেছি।” এই ঘটনায় ‘বড় মাথা’ জড়িত রয়েছে বলে মানস দাবি করলেও ভবেশকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এখনও তেমন সূত্র পায়নি পুলিশ।