তাপস দাস। নিজস্ব চিত্র
করোনার কোপে আটকে জাপানে রানাঘাট পুরসভার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তাপস দাস করোনাভাইরাসের আতঙ্কে আটকে রয়েছেন জাপানে।
তিনি একটি আমেরিকান জাহাজের কর্মী। পাঁচ দিন আগে আমেরিকা থেকে জাপানের ইউকহামা বন্দরে তাঁদের জাহাজ এসে পৌঁছলে সেখানে কয়েক জনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব মেলে। তাঁদেরকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়। জাহাজের বাকি কর্মীদের শহরের একটি লজে রাখা হয়েছে বলে তাপসের দাবি। তিনি শনিবার দুপুরে হোয়াটস অ্যাপ মারফত রানাঘাটের প্রতিবেশী অনিমেষ ঘোষকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
তাপসের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁর স্ত্রী এবং এক ছেলে কলকাতায় দমদমে একটি আবাসনে থাকে। বৃদ্ধা মা থাকেন রানাঘাটে। তাপস পেশায় এক জন শেফ। বছর ছেচল্লিশের তাপস আগে ১০ বছর বিভিন্ন দেশে কাজ করেছেন। গত চার বছর ধরে তিনি জাহাজে কাজ করছেন। বর্তমানে একটি আমেরিকান জাহাজে কাজ করেন। গত অগস্ট মাসে তিনি বাড়ি থেকে আমেরিকা গিয়েছেন। আগামি এপ্রিল মাসেই তাঁর বাড়ি ফিরে আসার কথা ছিল।
অনিমেষ জানিয়েছেন, হোয়াটস অ্যাপ মারফত এ দিন তাপসের সঙ্গে তাঁর কথা হয়। সেখানে তাপস জানান, বর্তমানে তিনি যে জাহাজটিতে রয়েছেন, সেটি জাপানের ইউকহামা বন্দরে এসে পৌঁছয় পাঁচ দিন আগে। সেখানে যাত্রীদের মেডিক্যাল পরীক্ষা করার সময়ে দেখা যায়, কয়েক জন যাত্রী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। বর্তমানে সেখানেই তাদের চিকিৎসা চলছে। সেই কারণে জাহাজটিকে ওই বন্ধরে আটকে রাখা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তাপস। তাপসের দাবি, তিনি সহ মোট ১০৯ জন কর্মী রয়েছেন ওই জাহাজে। তাঁর শারীরিক কোনও সমস্যা নেই। তাঁদেরকে বর্তমানে ওই শহরের একটি লজে রাখা হয়েছে। জাপান সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সব ঠিকঠাক থাকলে ১৯ ফেব্রুয়ারি জাহাজটিকে ছেড়ে দেওয়া হবে।
জাহাজ-কর্মীর প্রতিবেশি অনিমেষ ঘোষ এ দিন বলেন, ‘‘তাপসদা তাঁর মায়ের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তিনি ছেলের সব কথা শুনতে পাচ্ছিলেন না। সেই কারণে আজ দুপুরে আমি তাপসদার সঙ্গে কথা বলেছি। উনি সুস্থ রয়েছেন। বলেছেন, মা যেন তাঁর জন্য চিন্তা না করেন।”
তাপসের সত্তর বছরের বৃদ্ধা মা শান্তিরানি দাস এ দিন বলেন, ‘‘ছেলে বলেছে ও ভাল আছে। কিন্তু তা-ও ভয় করছে। বাড়িতে না ফেরা পর্যন্ত দুশ্চিন্তা দূর হবে না।”