অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস
সোশ্যাল মিডিয়ায় রঙ্গ-রসিকতা চলছিলই। দিলীপ ঘোষের ‘গরুর দুধে সোনা’ মন্তব্যের রেশ এবার বাস্তবের ময়দানে। গরু নিয়ে এক ব্যক্তি সটান হাজির সোনার বিনিময়ে ঋণদানকারী একটি সংস্থার ডানকুনি শাখার সামনে। তাই দেখে ‘থ’ এলাকাবাসী। কিন্তু ওই ব্যক্তিও প্রায় নাছোড়। শেষ পর্যন্ত পথচলতি এবং এলাকার ব্যবসায়ীরাই তাঁকে বুঝিয়ে সুঝিয়ে গরু সমেত বাড়ি পাঠান। হতাশ হয়ে ফিরে যান ওই ব্যক্তিও।
বুধবার অফিস খোলার কিছুক্ষণ পরেই সোনা বন্ধক রেখে ঋণ দেওয়া একটি সংস্থার ডানকুনি অফিসের সামনে হট্টগোল। কেন? কারণ, গরু নিয়ে অফিসের সামনে চলে এসেছেন এক ব্যক্তি। তাঁর দাবি, গরু বন্ধক রেখে ঋণ দিতে হবে তাঁকে। কারণ, তিনি শুনেছেন, গরুর দুধে সোনা আছে। পথচলতি কিছু মানুষ বোঝানোর চেষ্টা করলেও তাঁর বক্তব্য, সোনার বিনিময়ে যদি লোন দেওয়া হয়, তাহলে গরুর বিনিময়ে নয় কেন?
স্থানীয় একটি সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেন, ‘‘সোনার বিনিময়ে লোন চাই। তাই গরু সঙ্গে নিয়ে এসেছি। শুনেছি, গরুর দুধে সোনা থাকে।’’ একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, আমার ২০টা গরু আছে। পরিবার তার উপরেই নির্ভরশীল। লোন পেলে ব্যবসাটা আরও একটু বাড়াতে পারি, এই আর কী।’’
আরও পডু়ন: বেলাগাম জীবনযাত্রাই টাকার লালসা বাড়িয়ে গিয়েছে টিয়ার! এমনটাই ধারণা পুলিশের
গত সোমবারই বর্ধমান শহরে একটি সভায় দিলীপ ঘোষ বলেছিলেন, ‘‘গরুর দুধে সোনার ভাগ থাকে, তাই দুধের রঙ হলদে হয়।’’ তিনি ব্যাখ্যা দেন, ‘‘দেশি গরুর কুঁজের মধ্যে স্বর্ণনাড়ি থাকে। সূর্যের আলো পড়লে, সেখান থেকে সোনা তৈরি হয়।’’ তার পর থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ায় হাস্য-রসের খোরাক হয়ে যায় রাজ্য বিজেপি সভাপতির ওই মন্তব্য। শ্লেষ, কটাক্ষ, ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপে ভরে ওঠে ফেসবুক, টুইটার, হোয়াটসঅ্যাপ।
কিন্তু তা বলে এ রকম সরাসরি ঋণ নিতে হাজির! স্থানীয়দের একাংশ অবশ্য বলছেন, এর পিছনে তৃণমূলের হাত রয়েছে। দলের স্থানীয় নেতৃত্বই ওই ব্যক্তিকে এই কাণ্ড ঘটানোর পরামর্শ দিয়েছেন বলে কানাঘুষো এলাকায়। যদিও অভিযোগ উড়িয়ে দিলীপ ঘোষকে কটাক্ষে বিঁধেছেন স্থানীয় গরলগাছা পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান মনোজ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘গরুর দুধে সোনা আছে, এটা আবিষ্কারের জন্য দিলীপ ঘোষকে নোবেল দেওয়া উচিত।’’
আরও পড়ুন: ধেয়ে আসছে ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় ‘বুলবুল’, ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই উত্তাল হবে সমুদ্র, সতর্ক প্রশাসন
কিন্তু শুধু ওই গোল্ডলোন প্রদানকারী সংস্থা নয়, প্রায় প্রত্যেক দিনই নাকি পঞ্চায়েত অফিসেও গরু নিয়ে হাজির হচ্ছেন অনেকে। মনোজবাবুর দাবি, ‘‘প্রতিদিন গরু নিয়ে পঞ্চায়েতে আসছেন লোকজন। আমাকে জিজ্ঞেস করছেন গরুর বিনিময়ে কত টাকা লোন পেতে পারেন। তাঁরা এও বলছেন, প্রতিটি গরু প্রতিদিন ১৫-১৬ লিটার দুধ দেয়, তাহলে কেন লোন পাবেন না।’’