Fake ED officer

ইডি অফিসার পরিচয় দিয়ে বিয়ের চেষ্টা, অভিযুক্তকে সিজিও-র বাইরেই হাত-পা বেঁধে পেটাল তরুণীর পরিবার

তরুণীর পরিবারের দাবি, প্রায় ন’মাস আগে একটি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ওই তরুণীর সঙ্গে আলাপ জমান প্রদীপ। নিজেকে ইডি অফিসার হিসাবে পরিচয় দেন। এর পর দুই পরিবারের মধ্যে কথাবার্তা এগোয়।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০২৪ ১৭:৪৫
Share:

(বাঁ দিকে) ইডি অফিসারের পরিচয় দেওয়া অভিযুক্ত যুবক। (ডান দিকে) ভুয়ো আইডি কার্ড। —নিজস্ব চিত্র।

ইডি অফিসার পরিচয় দিয়ে এক তরুণীকে বিয়ের ভুয়ো প্রতিশ্রুতি এবং কয়েক লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। হাতেনাতে ধরা পড়ায় ভাগ্যে জুটল মারধরও। সেই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার হুলস্থুল পড়ে গেল কলকাতায় ইডির দফতর সিজিও কমপ্লেক্সের বাইরে। অভিযুক্ত ওই যুবকের নাম প্রদীপ সাহা। তিনি সোনারপুরের বাসিন্দা।

Advertisement

তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, নিজেকে ইডি অফিসার বলে পরিচয় দিয়েছিলেন প্রদীপ। বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে কয়েক লক্ষ টাকাও হাতিয়েছিলেন। তবে সন্দেহ হওয়ায় মঙ্গলবার প্রদীপের হাত-পা বেঁধে সটান সিজিওতে হাজির হন ওই তরুণীর পরিবারের সদস্যরা। পরিচয় ফাঁস হতে সিজিও-র মূল ফটকের বাইরে তাঁকে মারধর করা হয়।

অভিযোগকারী পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁদের বাড়ি বিরাটিতে। প্রায় ন’মাস আগে শাদি ডট কমের ওয়েবসাইটে তাঁদের বাড়ির মেয়ের সঙ্গে আলাপ জমান প্রদীপ। নিজেকে ইডি অফিসার বলেও পরিচয় দেন। এর পর দুই পরিবারের মধ্যে কথাবার্তা এগোয়। বিয়ের কার্ডও ছাপা হয়ে গিয়েছিল। তবে বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকেই প্রদীপের দাবি দাওয়া বাড়ছিল বলে অভিযোগ তরুণীর পরিবারের সদস্যদের। অভিযোগ, কয়েক ধাপে তাঁদের কাছে প্রায় চার লক্ষ টাকা নেন প্রদীপ। এ ছাড়াও, তিনি বার বার ওই তরুণীর থেকে টাকা চাইতেন এবং নিতেন। দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে অভিযানে গিয়ে তাঁর শরীর খারাপ হয়ে যাচ্ছে বলে চিকিৎসার নাম করেও প্রদীপ টাকা হাতিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তরুণীর পরিবারের সদস্যরা।

Advertisement

তরুণীর পরিবার জানিয়েছে, প্রদীপের টাকার চাহিদা উত্তরোত্তর বাড়তে থাকায় তাদের সন্দেহ হয়। প্রদীপের সম্পর্কে খোঁজ নিতে সোমবার সরাসরি সিজিও পৌঁছে যান তরুণীর ভাই দেবজিৎ সাহা। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দফতরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, প্রদীপ ওখানে কাজ করেন না। এর পরেই প্রদীপের হাত-পা বেঁধে তাঁকে নিয়ে মঙ্গলবার সিজিও কমপ্লেক্সে আসে তরুণীর পরিবার। সেখানে তাঁকে মারধর করা হয়। তাঁর কাছ থেকে ইডির ভুয়ো কার্ড এবং ‘ইডি’ লেখা জ্যাকেট উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

তরুণীর ভাইয়ের কথায়, ‘‘ইডি অফিসার পরিচয় দেওয়ার পর দিদির সঙ্গে বিয়ে ঠিক হয়। দিদির কাছ থেকে প্রায়ই টাকা নিত। ল্যাপটপও বিক্রি করবে বলেছিল। তবে সন্দেহ হওয়ায় সোমবার আমি খোঁজ নিতে আসি। নিরাপত্তারক্ষীরা আমাকে জানান যে, প্রদীপ এখানে কাজ করে না। আমি আসছি কোনও ভাবে জানতে পেরে আমার আগেই ইডি দফতরে এসেছিল প্রদীপ। কিন্তু ওকে এখান থেকে বার করে দেওয়া হয়।’’

তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, ইডির ভুয়ো কার্ড দেখিয়েই বিবাহযোগ্য তরুণীদের জন্য ফাঁদ পাততেন প্রদীপ। আরও অভিযোগ, প্রদীপের মা এবং বোনও তাঁকে সেই কাজে মদত করতেন। তরুণীর পরিবারের অভিযোগ, ফোনের একটি অ্যাপের মাধ্যমে সেই প্রতারণা চক্র চালাতেন প্রদীপ। যদিও প্রদীপের দাবি, জোর করে তাঁর গলায় ইডির কার্ড পরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিজেকে নির্দোষ বলেও দাবি করেছেন তিনি। প্রদীপকে ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছে ওই তরুণীর পরিবার। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হবে বলেও পুলিশ সূত্রে খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement