ধর্ষণের ২৩ বছর পর যাবজ্জীবন। — ফাইল ছবি।
মা গিয়েছিলেন প্রতিবেশীর বাড়িতে। ঘরে ঘুমিয়ে ছিল ১৪ মাসের শিশু। ঘরে ঢুকে সেই শিশুটিকে ধর্ষণ করে ৩০ বছরের যুবক। ২৩ বছর পর দোষীকে যাবজ্জীবন দিল কলকাতা হাই কোর্ট। সঙ্গে ১০ হাজার টাকা জরিমানা। অভিযুক্ত দাবি করেছিল, শিশুটি খাট থেকে পড়ে গিয়েই চোট পেয়েছিল। যৌন নির্যাতনে নয়। আদালত এই যুক্তি মানেনি। রায়ে আদালত জানিয়েছে, ঘটনার সময় অভিযুক্ত যে ঘরের মধ্যে ছিল, তা স্পষ্ট। পড়ে গেলে শিশুটির শরীরে আরও আঘাত লাগতে পারত, তা-ও হয়নি।
১৯৯৯ সালের ২০ মে-র ঘটনা। দুপুরে ঘরে ঘুমিয়ে ছিল শিশুটি। তখন দুপুর তিনটে। প্রতিবেশীর বাড়ি থেকে শিশুটির কান্নার শব্দ পেয়ে ছুটে আসেন তার মা। ঘরে ঢুকে দেখেন, ৩০ বছরের ওই যুবকের কোলে রয়েছে শিশুটি। ওই যুবকের নাম অসীম দত্ত। তাঁর কাছ থেকে শিশুটিকে ফেরত চান মা। কিন্তু অসীম রাজি হয়নি। শেষ পর্যন্ত ওই মহিলার ভাইঝির কাছে শিশুটিকে ফেরত দেয়। দেখা যায়, শিশুটির যৌনাঙ্গে ক্ষত রয়েছে।
ওই দিনই উত্তর ২৪ পরগনার বাগদা থানায় অভিযোগ দায়ের করে শিশুটির পরিবার। যদিও ধৃত অসীম দাবি করেছিল, মেঝেতে পাটকাঠি বিছানো ছিল। খাট থেকে সেখানে পড়ে গিয়েই চোট পেয়েছে শিশুটি। রাজ্য সরকারের আইনজীবী সঞ্জয় বর্ধন সেই যুক্তি খারিজ করে বলেন, ‘‘অমানবিক একটি ঘটনা। সমাজে এমন ঘটতে পারে ভাবাই যায় না। অপরাধী নিজেকে বাঁচানোর জন্য অনেক চেষ্টা করেছিল। কিন্তু মেডিক্যাল রিপোর্ট বলছে শরীরের শুধু যৌনাঙ্গেই আঘাতের চিহ্ন ছিল। অপরাধী যুক্তি দিয়েছিল, খাট থেকে পাট কাঠির উপরে পড়ে যাওয়ায় আঘাত লাগে। আদালত এই যুক্তি মানেনি।’’
নিম্ন আদালত অসীমকে দোষী সাব্যস্ত করে আগেই যাবজ্জীবন সাজা দিয়েছিল। সেই রায় চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করেছিল সে। এ বার হাই কোর্টের বিচারপতি জয়মাল্য বাগচী এবং অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই রায়ই বহাল রাখলেন।