এ বার জলপাইগুড়ি শহরের কাছে ছেলেধরা সন্দেহে এক মধ্যবয়স্ক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিল বাসিন্দারা। তাঁর পরিচয় বুধবার রাত পর্যন্ত জানা যায়নি। এ দিনই জলপাইগুড়ি শহরের শান্তি পাড়ায় একটি মুদির দোকান থেকে বিস্কুট চুরি করেছে অভিযোগে এক নাবালককেও এলাকার বাসিন্দারা গণপ্রহার দেয় বলে অভিযোগ। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।
প্রতক্ষ্যদর্শীদের দাবি, বুধবার শহর লাগোয়া জয়পুর চা বাগানে মাটিতে ফেলে বাঁশ-লাঠি দিয়ে ছেলেধরা সন্দেহে এক ব্যক্তিকে মারধর করা হয়। তাঁর মুখ, নাক দিয়ে রক্ত বের হতে শুরু করে। প্রচন্ড মার খেয়ে সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেন তিনি। তার পরে তিনি মরে গিয়েছেন ধরে নিয়ে অনেকেই সরে পড়েন। তবে এলাকারই কয়েক জন বাসিন্দা তখন ওই ব্যক্তিকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ওই ব্যক্তির পরিচয় জানা যায়নি।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, মঙ্গলবার রাত থেকে জয়পুর চা বাগানে ওই ব্যক্তিকে দেখা যায়। ইতস্তত ঘোরাঘুরি করছিলেন তিনি। বুধবার ভোরে ওই ব্যক্তি ছেলেধরা বলে দাবি করে কয়েক জন চেঁচামেচি জুড়ে দেন। কয়েক জন বাড়ি বাড়ি গিয়ে এলাকায় ছেলেধরা এসেছে বলে সাবধানও করে দিচ্ছিলেন। তাতেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। ওই ব্যক্তিকে ধাওয়া করেন কয়েক জন যুবক। তারপরেই মারধর শুরু হয় বলে অভিযোগ। জয়পুর চা বাগান এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য তৃণমূলের নারায়ণ ছেত্রী এবং পাতকাটা পঞ্চায়েতের প্রধান প্রধান হেমব্রম জানান, পঞ্চায়েতের তরফেও গুজব মোকাবিলার চেষ্টা হচ্ছে।
কিন্তু খাস শহরেই এক নাবালককে গণপিটুনি দেওয়ায়ও উদ্বিগ্ন প্রশাসন। অভিযোগ, ২২ জুলাই ওই নাবালক দুই সঙ্গীকে নিয়ে ওই একই দোকানে চুরি করেছিল। সে দিন ক্যাশ বাক্স থেকে টাকা ও কিছু দামি সরঞ্জাম চুরি করে একটি সিসি ক্যামেরা ভেঙে দেয়। মঙ্গলবার রাতে সে ফের ওই মুদি দোকানের বিস্কুটের প্যাকেট চুরি করে বলে অভিযোগ। বুধবার সকালে তা জানাজানি হওয়ার পরে কিছু বাসিন্দা নাবালকের বাড়ি তল্লাশি করে বিস্কুটের প্যাকেট পান। তার পরেই তাকে সবাই মিলে মারধর শুরু করে। ওই নাবালকের পরিবারের দাবি, তাঁরা অনেক বোঝানোর পরেও ওই কিশোর কথা শোনেনি। এলাকাবাসীর দাবি, সে অসুস্থ কি না, সে খোঁজও নেওয়া দরকার। পুলিশ জানিয়েছে, যারা মারধর করেছে, তাদের খোঁজ করা হচ্ছে।